বিশ্বের একমাত্র মহিলা নবাব কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেসা।

 

বিশ্বের একমাত্র মহিলা নবাব কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেসা।। মমিনুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও জীবনী বিষয়ক বিশ্লেষক, কুমিল্লা।।জন্য মক্কা গমন করেন। সেখানে গিয়েও তিনি অনেক দান করেন এবং মক্কা শরীফে একটি মুসাফিরখানা প্রতিষ্ঠা করেন। যা এখনো বিদ্যমান। মক্কাশরীফ থেকে এসে পরিবার-পরিজনদের জন্য সামান্য কিছু সম্পত্তি রেখে বাকি সমস্ত সম্পত্তি আল্লাহর নামে ওয়াকফ করে দেন। সম্পত্তি ওয়াকফ করার পর তিনি বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব ও হাসপাতাল নির্মাণে অনেক টাকা দান করেন। তার ব্যক্তিগত দৈনন্দিন দিনযাপনের তালিকাতেও অনেককিছুু শিক্ষণীয় বিষয় রেখে গেছেন আমাদের জন্য।

যদিও তার স্বামী মোহাম্মদ গাজী নবাব ফয়জুন্নেসার সঙ্গে ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছিলেন কিন্তু তিনি একজন উচ্চবংশীয় জমিদার ও সুরুচির অধিকারী মানুষ ছিলেন। বেগম ফয়জুন্নেসা দুই কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন। তার দু’কন্যার নাম আসাবুন্নেসা ও বদরুন্নেসা। এই মহীয়সী নারী ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ খ্রীস্টাব্দ ইহলোক ত্যাগ করেন।
 
পরিশেষে বলতে হয়, আাল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানের আলোকে যে মানবতাবাদী নারী বিরল গুণাবলী ও দক্ষতার সঙ্গে সমাজ, দেশ-জাতিকে আলোকিত করেছিলেন; সমাজকে করেছিলেন কুসংস্কার মুক্ত; নারীদের শিখিয়েছিলেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার; সাহস ও সুযোগ করে দিয়েছিলেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার; সেই খ্যাতিমান নারীর জীবনী আমাদের মধ্যে অনুশীলন হবে না-তা কি করে হয়?
 
আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই নারীর বিশাল জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম খুব কমই জানে। প্রচার-প্রচারণাও তেমন একটা নেই বললেই চলে আমাদের দেশে। যদিও কিছু সৃষ্টিশীল মানুষ যেমন লাকসামের আমাদের প্রিয় ব্যক্তি শাহেদ আহমদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন সংগঠক ১ যুগ আগে নবাব ফয়জুন্নেসার জীবনকর্ম নিয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু কিছু দিন পর শাহেদ আহমদ চৌধুরী পরলোক গমন করায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পরে। ওইসময় আবারও মহীয়সী নারীর ফয়জুন্নেসার আদর্শকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন কিছু সৃষ্টিশীল মানুষ। যা চলছে বছরের পর বছর। কিন্তু সরকার ও বিত্তশালীদের কাছ থেকে কোন রকম সাহায্য-সহযোগিতা না
 
পাওয়ায় এই সাংগঠনিক কার্যক্রমকে তেমন একটা বেগবান করতে পারছেন না তারা। বিশেষ করে আমাদের সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব আজাদ সরকার লিটন ১ যুগ ধরে এই মহীয়সী নারীর কর্মকাণ্ড নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি দেশের বিভিন্ন সাংগঠনিক ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ও ফয়জুন্নেসার জীবনী নিয়ে সকলকে কাজ করার উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রদান করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। আমরা মনে করি, আজাদ সরকার লিটনের মত অন্যান্য সৃষ্টিশীলদেরও এই মহতী কাজে এগিয়ে আসা জরুরি। আর তবেই আমরা নবাব ফয়জুন্নেসার আলোয় আলোকিত হতে পারবো; সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নিজেরাও ধন্য হবো।

No comments

Theme images by mammuth. Powered by Blogger.