বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ১০ টি বিষয় মনে রাখতে হবে In the present scenario, we have to keep in mind 10 things.মানুষের জীবনে ধর্যের প্রয়োজনীয়তা অনেক। প্রত্যেকের প্রয়োজন মুসিবত আসার পূর্বেই নিজকে মুসিবত সহনীয় করে তোলা, অনুশীলন করা ও নিজেকে শোধরে নেয়া। কারণ ধৈর্য কষ্টসাধ্য জিনিস, যার জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। । এতে কোনো প্রাণীর স্থায়িত্ব বলে কিছু নেই। আছে শুধু ক্ষয়িষ্ণু এক মেয়াদ, সিমীত সামর্থ। এ ছাড়া আর কিছুই নেই। ££££££££££££££££££££££££


মানুষের জীবনে ধর্যের প্রয়োজনীয়তা অনেক। প্রত্যেকের প্রয়োজন মুসিবত আসার পূর্বেই নিজকে মুসিবত সহনীয় করে তোলা, অনুশীলন করা ও নিজেকে শোধরে নেয়া। কারণ ধৈর্য কষ্টসাধ্য জিনিস, যার জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। । এতে কোনো প্রাণীর স্থায়িত্ব  বলে কিছু নেই। আছে শুধু ক্ষয়িষ্ণু এক মেয়াদ, সিমীত সামর্থ। এ ছাড়া আর কিছুই নেই। 

বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদেরকে ১০ টি বিষয় মনে রাখতে হবে। 
১. তাকদিরের উপর ঈমান
একদা রাসূল (ﷺ)-এর সহধর্মিনী উম্মে হাবিবা রাদিআল্লাহু আনহা মুনাজাতে বলেন, ‘‘হে আল্লাহ! আমার স্বামী রসূল, আমার পিতা আবু সুফিয়ান এবং আমার ভাই মুয়াবিয়ার দ্বারা আমাকে উপকৃত করুন।’’ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন : ‘‘তুমি নির্ধারিত হায়াত, নির্দিষ্ট কিছু দিন ও বণ্টনকৃত রিযিকের প্রাথর্না করেছ। যাতে আল্লাহ তাআলা আগ-পাছ কিংবা কম-বেশী করবেন না। এরচে’ বরং তুমি যদি জাহান্নামের আগুন ও কবরের আযাব থেকে নাজাত প্রার্থনা করতে, তাহলে তোমার জন্য কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক হত।’’ মুসলিম শরীফ : ৪৮১৪। ইমাম নববী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘‘হাদীসের বক্তব্যে সুষ্পষ্ট, মানুষের হায়াত, রিযিক আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত, তার অবিনশ্বর জ্ঞান অনুযায়ী লিপিবদ্ধ এবং হ্রাস-বৃদ্ধিহীন ও অপরিবর্তনীয়। মুসলিম :।
২.মুসিবত আসার পূর্বেই নিজকে মুসিবত সহনীয় করে তোলা, ঃ রসূলুল্লাহ (ﷺ) পার্থিব জীবনের উদাহরণে বলেন :পার্থিব জীবন ঐ পথিকের ন্যায়, যে গ্রীষ্মে রৌদ্রজ্জ্বল তাপদগ্ধ দিনে যাত্রা আরম্ভ করল, অতঃপর দিনের ক্লান্তময় কিছু সময় একটি গাছের নীচে বিশ্রাম নিল, ক্ষণিক পরেই তা ত্যাগ করে পুনরায় যাত্রা আরম্ভ করল।’’  মুসনাদে ইমাম আহমাদ : ২৭৪৪জনৈক বিদ্বান ব্যক্তি বলেন, ‘‘যে দুনিয়া থেকে সতর্ক থেকেছে ভবিষ্যত জীবনে সে অস্থির হয়নি। যে অনুশীলন করেছে পরবর্তীতে তার পদস্খলন ঘটেনি। যে অবর্তমানে অপেক্ষমাণ ছিল বর্তমানে সে দুঃখিত হয়নি।’’ মুদ্দা কথা, যে পার্থিব জগতে দীর্ঘজীবি হতে চায়, তার প্রয়োজন মুসিবতের জন্য ধৈর্য্যশীল এক হৃদয়।
৩. রসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং আদর্শ পূর্বসূরীদের জীবন চরিত পর্যালোচনাঃ রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সীরাত চিন্তাশীল, গবেষকদের জ্ঞানের খোরাক জোগায়। তার পূর্ণ জীবনটাই ধৈর্য ও ত্যাগের দীপ্ত উপমা। লক্ষ্য করুন, সল্প সময়ে মধ্যে চাচা আবু তালিব, যিনি রসূলুল্লাহ (ﷺ)  থেকে কাফেরদের অত্যাচার প্রতিহত করতেন; একমাত্র বিশ্বস্ত সহধর্মিনী খাদিজা; কয়েকজন ঔরসজাত মেয়ে এবং ছেলে ইব্রাহিম ইন্তেকাল করেন। চক্ষুযুগল অশ্রসিক্ত, হৃদয় ভারাক্রান্ত, স্মায়ুতন্ত্র ও অস্থিমজ্জা নিশ্চল নির্বাক। এর পরেও প্রভুর ভক্তিমাখা উক্তি : ‘‘চোখ অশ্রুসিক্ত, অন্তর ব্যথিত, তবুও তা-ই মুখে উচ্চারণ করব, যাতে প্রভু সন্তুষ্ট, হে ইব্রাহিম! তোমার বিরহে আমরা গভীর মর্মাহত।’’ বুখারী : ১৩০৩ আরো অনেক আত্মো র্সগকারী সাহাবায়ে কেরাম মারা যান, যাদের তিনি ভালবাতেন, যারা তার জন্য উৎসর্গ ছিলেন। এত সব দুঃখ-বেদনা তার শক্তিতে প্রভাব ফেলতে পারেনি। ধৈর্য-অভিপ্রায়গুলো ম্লান করতে পারেনি।
৪. প্রভুর প্রতি সুধারণা পোষণ ঃ সত্যিকার মুমিন আপন প্রভুর প্রতি সুধারণা পোষণ করে। হাদিসে কুদসিতে আছে, আল্লাহ তাআলা বলেন :আমার ব্যাপারে আমার বান্দার ধারণা অনুযায়ী, আমি ব্যবহার করি।’’ বুখারী : ৬৭৫৬ মুসলিম : ৪৮২২মুসিবত দৃশ্যত অসহ্য-কষ্টদায়ক হলেও পশ্চাতে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। তাই বান্দার কর্তব্য আল্লাহর সুপ্রসস্ত রহমতের উপর আস্থাবান থাকা। এরশাদ হচ্ছে :এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।’’ বাকারা : ২১৬রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন :‘মোমিনের বিষয়টি চমৎকার, আল্লাহ তাআলা যা ফয়সালা করেন, তা-ই তার জন্য কল্যাণকর।’’ মুসনাদ : ২০২৮৩
 ৫. অধিকতর বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের দেখাঃ অন্যান্য বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিদের দেখা, তাদের মুসিবতে স্মরণ করা। বরং অধিকতর বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির দিকে নজর দেয়া। এতে সান্ত্বনা লাভ হয়, দুঃখ দূর হয়, মুসিবত হয় সহনীয়। হ্রাস পায় অস্থিরতা ও নৈরাশ্যতা। জেনে রাখা ভাল, রসূল (ﷺ) বলেছেন : ‘ধৈর্য অসম্ভব বা অসাধ্য কিছু নয়, যে র্ধৈয্যধারণ করে আল্লাহ তাকে ধৈর্য্যধারণের ক্ষমতা দান করেন।’’ বুখারী : ১৩৭৬বিকলাঙ্গ বা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি, তার চেয়ে কঠিন বিপদগ্রস্তকে দেখবে। একজনের বিরহ বেদানায় ব্যথিত ব্যক্তি, দুই বা ততোধিক বিরহে ব্যথিত ব্যক্তিকে দেখবে। এক সস্তানহারা ব্যক্তি, অধিক সন্তানহারা ব্যক্তিকে দেখবে। সব সন্তানহারা ব্যক্তি, পরিবারহারা ব্যক্তিকে দেখবে।
  ৬. মুসিবত পুণ্যবাণ হওয়ার আলামতঃ রসূল (ﷺ) বলেছেন : ‘‘আল্লাহ যার সাথে কল্যাণের ইচ্ছা করেন, তার থেকে বাহ্যিক সুখ ছিনিয়ে নেন।’’ বোখারি : ৫২১৩ মুসলিম : ৭৭৮ তিনি আরো বলেন :আল্লাহ তাআলা যখন কোন সম্প্রদায়কে পছন্দ করেন, তখন তাদেরকে বিপদ দেন ও পরীক্ষা করেন।’’ তিরমিযী : ২৩২০ ইবনে মাজাহ : ৪০২১
৭. মুসিবতের বিনিময়ে উত্তম প্রতিদানের কথা স্মরণঃ মোমিনের কর্তব্য বিপদের মুহূর্তে প্রতিদানের কথা স্মরণ করা। এতে মুসিবত সহনীয় হয়। কারণ কষ্টের পরিমাণ অনুযায়ী সওয়াব অর্জিত হয়। সুখের বিনিময়ে সুখ অর্জন করা যায় না- সাধনার ব্রিজ পার হতে হয়। প্রত্যেককেই পরবর্তী ফলের জন্য নগদ শ্রম দিতে হয়। ইহকালের কষ্টের সিঁড়ি পার হয়ে পরকালের স্বাদ আস্বাদান করতে হয়। এরশাদ হচ্ছে : কষ্টের পরিমাণ অনুযায়ী প্রতিদান প্রদান করা হয়।’’ তিরমিযী : ২৩২০
৮. স্বলাত রহমানের পক্ষ থেকে বিশেষ হিফাযত : যে ব্যক্তি সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে একাগ্রতার সাথে জামাআতে স্বলাত আদায় করে আল্লাহ তা‘আলা সেদিন তার হিফাযত করবেন, যেদিন অন্যান্য মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে।উমর  অন্তিম শয্যায় শায়িত। তাঁর চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বললেন, তোমরা স্বলাতের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। যে ব্যক্তি স্বলাত তরক করে ইসলামে তার কোন অংশ নেই। মুয়াত্তা ইমাম মালেক, মুসন্নাফে ইবনে আবী শাইবাযে ব্যক্তি স্বলাতের হিফাযত করবে, আল্লাহ তাকে হিফাযত করবেন। আর যে ব্যক্তি স্বলাত নষ্ট করবে আল্লাহ তাকে ধ্বংস করবেন। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, প্রতিদান কর্ম অনুযায়ী হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-وَأَوْفُوا بِعَهْدِي أُوفِ بِعَهْدِكُمْ وَإِيَّايَ فَارْهَبُونِ ﴿البقرة:40﴾তোমরা আমার সাথে-কৃত ওয়াদা পূর্ণ কর, আমি তোমাদের সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করব’’। সূরা বাকারা: ৫৫ আর এ এখানে সংরক্ষণ স্বলাত ও মুসল্লীর মাঝে পরস্পরে হয়ে থাকে। যেমন যেন বলা হয়েছে, তুমি স্বলাতের হিফাযত কর যাতে স্বলাত তোমাকে হিফাযত করে। তবে স্বলাত কর্তৃক মুসল্লীর হিফাযত কয়েকভাবে হয়ে থাকে। 
৯.অপরাধের কাফফারা-প্রায়শ্চিত্তঃ  আল্লাহর রহমতের প্রসস্ততা ও করুণার ব্যাপকতার স্মরণরসূল (ﷺ) বলেন : ‘‘হে আবু বকর, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন, তুমি কি অসুস্থ হও না? তুমি কি বিষণ্ণণ হও না? মুসিবত তোমাকে কি পিষ্ট করে না? উত্তর দিলেন, অবশ্যই। বললেন : এগুলোই তোমাদের অপরাধের কাফফারা-প্রায়শ্চিত্ত।’’আরো জান্নাতের ওয়াদা আছে, প্রিয় ব্যক্তির মৃত্যুতে ধৈর্য্যধারণকারীর জন্য। রসূল (ﷺ) এরশাদ করেন : ‘‘আল্লাহ তাআলা বলেছেন, আমি যখন আমার মুমিন বান্দার অকৃত্রিম ভালোবাসার পাত্রকে দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নেই। এবং তাতে সে ধৈর্য্যধারণ করে, ছওয়াবের আশা রাখে, আমার কাছে তার বিনিময় জান্নাত বৈ কি হতে পারে?’’ অর্থাৎ নিশ্চিত জান্নাত। বুখারী : ৫৯৪৪৯.  ১০. আপত্তি অভিযোগ ও অস্থিরতা ত্যাগ করাঃ যে কোন বিপদাপদের সময় অসহিষ্ণুতা ও আপত্তি-অভিযোগ পরিহার করা। এটাই সান্ত্বনার শ্রেয়পথ। শান্তির উপায়-উপলক্ষ। যে এর থেকে বিরত থাকবে না, তার কষ্ট ও অশান্তি দ্বিগুন হবে। বরং সে নিজেই স্বীয় শান্তি বিনাশকারী-নিঃশেষকারী। কোন অর্থেই তার জন্য ধৈর্য্য প্রযোজ্য হবে না, মুসিবত থেকে নাজাতও পাবে না। কারণ ধৈর্য যদি হয় বিপদাপদ মূলো পাটনকারী, অধৈর্য্যতা তার পৃষ্ঠপোষকতা-দানকারী। যার বিশ্বাস আছে, নির্ধারিত বস্ত্ত নিশ্চিত হস্তগত হবে, নির্দিষ্ট বস্ত্ত নিশ্চিত অর্জিত হবে, তার ধৈর্য্য পরিহার করা নিরেট বিড়ম্বনা- আরেকটি মুসিবত। আল্লাহ তাআলা বলেন :‘যমীনে এবং তোমাদের নিজদের মধ্যে এমন কোন মুসীবত আপতিত হয় না, যা আমি সংঘটিত করার পূর্বে কিতাবে লিপিবদ্ধ রাখি না। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজ। যাতে তোমরা আফসোস না কর তার উপর যা তোমাদের থেকে হারিয়ে গেছে এবং তোমরা উৎফুল্ল না হও তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তার কারণে। আর আল্লাহ কোন উদ্ধত ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না।’’  হাদীদ : ২২-২৩
  





No comments

Theme images by mammuth. Powered by Blogger.