স্বামীর সন্তুষ্টিতে স্ত্রীর জান্নাতের ফয়সালা

স্বামীর সন্তুষ্টিতে স্ত্রীর জান্নাতের ফয়সালা

মমিনুল ইসলাম মোল্লা
বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক মুসলমান। মুসলমান নারী ও পুরুষ কোরআন ও হাদিস অনুসরণ করে দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি লাভের চেষ্টা করে। ইসলাম ধর্মে পুরুষকে নারীর অভিভাবক হিসেবে স্থান দেয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে বাংলাদেশের নারীরা বিপথগামী হচ্ছে। সমানাধিকারের নামে তারা সমাজ ও সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করছে। পবিত্র কুররআনে আল্লাহ বলেন-“পুরুষরা নারীর তত্তাবধায়ক; একারণে যে আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যায় করে। ” তাই সমানাধিকার কিংবা নারী স্বাধীনতার নাম দিয়ে উচ্ছৃংখল আচরণ করা কোন মুসলিম নারীর জন্য শোভনীয় নয়। তবে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পুরুষগণ ও সীমা লংঘন করতে পারবেনা। সূরা বাকারায় আল্লাহ তায়ালা বলেন- “তারা তোমাদের জন্য আবরণ এবং তোমরা তাদের জন্য আবরন” । তাই সংসারে নারী পুরূষকে সংযম ও সহনশীলতা ও ভালবাসা প্রদর্শনের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে হবে।  । 
স্ত্রী হলো সংসারের রাণী। স্বামী পেশাগত কারণে ঘরের বাইরে কাজে ব্যাস্ত থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। এসময় স্ত্রীর দায়িত্ব হচ্ছে সংসার দেখশুনা করা।স্বামী বাইরে থেকে ফিরলে তাকে সাদরে হাসিমুখে বরণ করে নিতে হবে। স্ত্রীর হাসি মাখা মুখ দেখে স্বামী সারা দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। রাসূল (সা:) বলেছেন -যখন কোন লোক তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে কিন্তু সে আসে না। ফলে স্বামী তার প্রতি অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত কাটায় ফেরেস্তাগণ তাকে সকাল হওয়া পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে (মুসলিম শরীফ)  । স্ত্রী নিজে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং স্বামীকেও ইবাদত করতে সাহায্য করবে। তবে নফল এবাদত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে স্বামীর অনুমতি নিবে।স্ত্রী যদি স্বামীর কথায় কর্ণপাত না করে তাহলে তাকে বুঝাতে হবে। প্রয়োজনে তাকে প্রতিকী শাস্তি দেয়া যাবে। তবে ধর্মের দোহাই দিয়ে তাকে শারিরীক বা মানসিকভাবে গুরুতর শাস্তি দেয়া যাবে না। নারী একদিকে গৃহবধু অন্যদিকে সেবাদানকারিনী। তাই স্বামী অসুস্থ হলে তাকে সেবা করতে হবে। প্রয়োজনে তার নিকট রক্ষিত সম্পদও ব্যায় করতে হবে। হযরত ইয়াকুব নবী ১৮ বছর কুষ্ঠু রোগে আক্রান্ত থাকলে তার স্ত্রী রহিমা তাকে সুষ্ঠুভাবে সেবা করেন। রাসূল সা: বলেন- নারীর জন্য জিহাদ হলো তার স্বামীর সেবা করা। 
সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে -“তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদেও শস্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।” তাই বলে পুরুষদের স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ নেই। একজন স্বামীকে অবশ্যই তার স্ত্রীর চোখে ভাল হতে হবে। একজন ব্যক্তির চোখে ভাল হতে হলে  তার সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। তার চাহিদার দিকে খেয়াল রাখতে হবে; এটাই স্বাভাবিক। মহানবী (স:) বলেছেন “ তোমরা নারীদের প্রতি কল্যাণকামী হও। তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম (তিরমিজি)। স্বামী তার স্ত্রীর প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখবে, তবে কেউ চাহিদা পূরণে অক্ষম হলে তাকে এজন্য হেয় করা যাবেনা। 
স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলেই সংসার। স্বামীর প্রতি ভালবাসা প্রদর্শন স্ত্রীর প্রাথমিক দায়িত্ব। এ দায়িত্বে অবহেলা করলে সংসারে অশান্তি নেমে আসে। শ্রদ্ধা আর ভারবাসার মাধ্যমে সংসারে শান্তির সুবাতাস বয়ে যায়।স্ত্রী কোন কাজে ভুল করলে তাকে অন্যের সামনে হেয় করা যাবে না, ঠিক তেমনিভাবে স্বামীর সামর্থের বাইরে তার কাছে কিছু চাওয়া যাবে না। শুধু মাত্র ইসলাম ধর্মের আনুসারীদের জন্যই এ নিয়ম নয় হিন্দু ধর্মেও কঠোরভাবে স্বামীর সেবা করার কথা বলা হয়েছে। স্বামী কিসে সন্তুষ্ট হন তা ভেবে খেতে হবে। তার মেজাজ-মর্জি বুঝে তার সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে।  মে ২০১২ বোম্বে হাইকোর্ট বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত এক মামলায় নির্দেশ দেয়-“সীতা তার স্বামী রামের সঙ্গে বনবাসেও গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ১৪ বছর কাটিয়েছেন। সব স্ত্রীর উচিৎ সীতার আদর্শ অনুসরণ করা। স্ত্রীকে হতে হবে সীতার সতই পতিপরায়ন।” যারা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাচ্ছেন তারা জানেন কী ঐসব দেশে যে কোন মুসলিম দেশের চেয়ে বেশি পরিমানে নারী নির্যাতন হচ্ছে ? ১৯ অক্টোবর ২০১২  দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে প্রতি বছর ১ লাখ ৩২ হাজার নারী ধর্ষণের শিকার হন। তাই পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে গা না ভাসিয়ে ইসলামের ছায়াতলে এসে আমাদেও মা-বোনেরা স্বামীর সেবায় রত হলে তাদের ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির ব্যবস্থা হবে। ইনশাল্লাহ। 
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের  প্রভাষক ও সাংবাদিক, কুমিল্লা। ০১৭১১৭১৩২৫৭    সধসরহসড়ষষধয@ুধযড়ড়.পড়স

ওহির আলোকে-স্বামীর সন্তুষ্টি

সূরা বাকারায় আল্লাহ তায়ালা বলেন- “তারা তোমাদের জন্য আবরণ এবং তোমরা তাদের জন্য আবরন” ।
পবিত্র কুররআনে আল্লাহ বলেন-“পুরুষরা নারীর তত্তাবধায়ক; একারণে যে আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যায় করে। ”
রাসূল (সা:) বলেছেন -যখন কোন লোক তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে কিন্তু সে আসে না। ফলে স্বামী তার প্রতি অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত কাটায় ফেরেস্তাগণ তাকে সকাল হওয়া পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে (মুসলিম শরীফ)  ।
রাসূল সা: বলেন- নারীর জন্য জিহাদ হলো তার স্বামীর সেবা করা। 
সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে -“তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদেও শস্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।”
মহানবী (স:) বলেছেন “ তোমরা নারীদের প্রতি কল্যাণকামী হও। তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম (তিরমিজি)।
মমিনুল ইসলাম মোল্লা

No comments

Theme images by mammuth. Powered by Blogger.