রমজান মাসে দান-খয়রাত করলে সোয়াব বেশি পাওয়া যায়।
রমজান মাসে দান-খয়রাত করলে সোয়াব বেশি পাওয়া যায়।
তাই এসময় মুসলমানগন অধিক পরিমানে দান করেন। তাই যাকাত, ফেতরাসহ অন্যান্য আর্থিক ইবাদত এসময় বেশি করে করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। যাকাত ফরয, সাদকাতুল ফেতর ওয়াজিব । এ দুটিই সাধারণত রমজান মাসে দান করা হয়। রমজানে আমরা যে গরীব লোকটিকে দান করলাম তার অভাব কিন্তু শেষ হয়ে যায় নি। আমরা যদি বলি শাওয়াল মাসে কেউ সাহায্য চাইলে আমরা যদি বলি -ভাই আবার রমজান মাস এলে আমার কাছে এসো, তাহলে সে হয়তো বলবে বাকী ১১ মাস খাবো কী, বাঁচবো কী করে ? তাই প্রতি মাসেই কিছু কিছু দান খয়রাত করতে হবে। দানের ফজিলতের ব্যাপারে আমাদের আলেম ওলামাগন যেভাবে তৎপর দানের উৎসের ব্যাপারে ততটা তৎপর নন। দানকারীর আয়-রোজগার হালাল না হারাম সে ব্যপারে তাদের কোন টেনশন নেই। অথচ হালাল মাল ইবাদত কবুলের অন্যতম শর্ত। সাহাবায়ে কেরামগন যাদের আয় বৈধ নয় তাদের জন্য দোয়া করতেন না। কুমিল্লার নন্দিবাজারের নটির ( পাকা ও সুদর্শনীয়) মসজিদের বয়স ৭৫/৮০ বছর হলেরও এলাকাবসী সেটি মেনে নেননি। অর্থাৎ এমসজিদে এ পর্যন্ত কোন আযান হয়নি এবং এলাকাবাসী নামাজ আদায় করেননি। কারণ ঐ মহিলার আয় বৈধ ছিলনা। বিশিষ্ট সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) বসরার প্রশাসককে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গেলে তার জন্য দোয়া চাইলে তিনি দোয়া করতে অস্বীকার করেন। অথচ আমাদের সমাজে কেউ অধিক টাকা দান করলে সবাই জোরে মারহাবা বলে তাকে উৎসাহিত করেন। হারাম-হালাল চিন্তা করে দান গ্রহণ করলে হয়তো গ্রামে গ্রামে পাকা কিংবা টাইলস করা মসজিদ শোভা পেতনা। তবে একথা সত্য নবীজীর আমলের খেজুর পাতার মসজিদে নামাজ পড়ে যে শান্তি পাওয়া যেত আজকাল অনেক এসি করা মসজিদেও তা হয়তো পাওয়া যায় না। রাসুলুল্রাহ সাঃ হাদিস শরিফে উল্লেখ করেন- যার খাদ্য হারাম, পোশাক হারাম, পানীয় হারাম ও হারাম উপার্জনরে মাধ্যমে তার রক্তমাংস গড়ে উঠেছে তার দুআ কিবাবে কবুল হবে ? (সহীহ মুসলিম২/৭০৩, নং ১০১৫) ।যারা খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে, তারা আমাদের মতই মানুষ। আমাদের ক্ষিধা লাগলে আমরা যেমন কষ্ট পাই তেমনি তারাও কষ্ট অনুভব করে। কোন সময় আমাদের কোন চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম না হলে আমাদেও খুব খারাপ লাগে। আর তারা দিনের পর দিন খেয়ে -না খেয়ে কিভাবে দিন কাটায় , তা আমাদের হৃদয় দিয়ে বুঝতে হবে। সুরা বাকারাতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন- “ আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে কী তারা ব্যায় করবে। বলে দাও নিজেদের প্রয়োজনীয় খরচের পর যা বাঁচে তাই ব্যায় করবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্দেশ সুস্পষ্টরুপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পার। ” সুরা আল বাকরার ১৭৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে-সৎকর্ম শুধু এই নয় যে পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হলো এই যে ঈমান আনবে, আল্লাহর উপর, কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেস্তাদের উপর, এবং সমস্ত নবী রসুলগনের উপর, আর সম্পদ ব্যায় করবে তারই মহব্বতে, আত্মীয় স্বজন, এতিম-মিসকীন, মুসাফির ভিক্ষুক, ও মুক্তিকামী ক্রিতদাসদেও জন্য। এ সুরার ২১৯ আয়াতে পিতামাতার জন্য ব্যায় করার কথা বলা হয়েছে। যারা প্রকৃতপক্ষে অভাবী কিন্তু তারা তাদের অভাবের কথা কাউকে প্রকাশ করেনা, কাকুতি মিনতি করে ভিক্ষা চায় না, তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনে নিয়ে তাদেরকে গোপনে দান করতে হবে।
আমাদের দেশে “ মানত ”করার ব্যপারটি বহুলভাবে প্রচলিত রয়েছে। “ আল্লাহ আমার ছেলেটা যদি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পায় তাহলে এমিতখানায় একটি খাসি দেব, যদি মেয়েটার নরমাল ডেলিভারি হয় এবং মা ও বাচ্চা সুস্থ থাকে তাহলে মাজারে শির্নি দেব অথবা ১০ জন হুযুর খাওয়াবো। আমাদের সমাজে এ ধরণের মানত করতে দেখা যায়। এ ধরনের মানত করার কথা ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহকে শর্ত দেয়া কোন বান্দার উচিত নয়। এছাড়া নবিজি বলেছেন মানত কোন কিছুকে ঠেকাতে পারে না। তবে মানতের মাধ্যমে কৃপন ব্যক্তির সম্পদ বের হয়ে আসে। এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ)।এটি সহিহ মুসলিম শরিফের ৪২৩৯ নং হাদিস।
সর্বোত্তম দান হচ্ছে সদকায়ে জারিয়া। এটি হলো এমন দান যার কার্যকারিতা কখনও শেষ হবে না। তা কেয়ামত পর্যন্ত চলবে। সাদকায়ে জারিয়া এর মধ্যে রয়েছে , মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণ, এতিমখানা তৈরি, গরীব ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান, রাস্তা-ঘাট, হাসপাতাল, পুকুর খনন, নলকুপ বসানো, পাঠাগার স্থাপন। এছাড়া সেতু নির্মাণ, ইসলামী পুস্তক দান ও বৃক্ষরোপন সাদকায়ে জাড়িয়ার অন্তর্ভূক্ত। সুরা বাকারাতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন-যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান খয়রাত কর তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি খয়রাত গোপনে কর এবং অভবাগ্রস্তদের দিয়ে দাও , তবে তা তোমাদের জন্য আরও উত্তম। আল্লাহতায়ালা তোমাদের কিছু গোনাহ দূর করে দিবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খোঁজ খবর রাখেন। ” আমাদের জীবন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। স্বল্প সময়ের জন্য আমরা মেহমান হিসেবে দুনিয়াতে এসেছি। অথচ আমাদের কাজ-কর্ম ও চিন্তা ভবানার ধরণ দেখে মনে হয় আমরা চিরদিন পৃথিবীতে থাকবো। এটি খুবই ভুল ধারণা । আমরা যেন দুনিয়াতে থাকতেই রোজা-নামাজও দান-সদকার মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণে পূণ্য অর্জণ করতে পারি, আল্লাহ আমাদেরকে সে তৌফিক দান করুন। আমিন।
৭০০ ওয়ার্ডের অতিরিক্ত
সুরা নিসার ৩৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে-আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনা, ঈমান আনেনা কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হলো নির্কষ্টতর সাথী। ”অন্য যায়গায় অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ না করার কথা বলা হয়েছে। সুরা নিসার ৩৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে-আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনা, ঈমান আনেনা কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হলো নির্কষ্টতর সাথী। ”অন্য যায়গায় অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ না করার কথা বলা হয়েছে। সুরা নিসার ৩৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে-আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনা, ঈমান আনেনা কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হলো নির্কষ্টতর সাথী। ”অন্য যায়গায় অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ না করার কথা বলা হয়েছে। সুরা নিসার ৩৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে-আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনা, ঈমান আনেনা কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হলো নির্কষ্টতর সাথী। ”অন্য যায়গায় অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ না করার কথা বলা হয়েছে। সুরা নিসার ৩৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে-আর সে সমস্ত লোক যারা ব্যয় করে স্বীয় ধন সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনেনা, ঈমান আনেনা কেয়ামত দিবসের প্রতি এবং শয়তান যার সাথী হয় সে হলো নির্কষ্টতর সাথী। ”অন্য যায়গায় অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ না করার কথা বলা হয়েছে।
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, প্রভাষক , সাংবাদিক ও ধর্মীয় গবেষক, কুমিল্লা। সধসরহসড়ষষধয@ুধযড়ড়.পড়স

No comments