ওহির আলোকে নফল রোজার মাস শাবান
ওহির আলোকে নফল রোজার মাস শাবান
ফজিলতের মাস শাবান।এ মাসটি রমজানের প্রস্তুতির মাস। এ মাসের ১৫ তারিখ
পর্যন্ত রাসুলে আকরাম সাঃ বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন। শাবান মাসে নফল সওম রাখা সম্পর্কে বণির্ত সহীহ হাদীস সমূহ:
শাবান মাসে নফল সওম রাখা সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নিন্মে এ সম্পর্কীত কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হল:
ক) আয়েশা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল (ﷺ) যখন (নফল) সওম রাখতে শুরু করতেন তখন আমরা বলতাম যে তিনি সওম রাখা আর বাদ দিবেন না। আবার যখন সওম বাদ দিতেন তখন আমরা বলতাম তিনি আর সওম করবেন না। তবে তাঁকে রামাযান ছাড়া পরিপূর্ণভাবে অন্য কোন মাসে সওম রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে অন্য কোন মাসে এত বেশি সওম রাখতে দেখিনি।”
খ) নবী (ﷺ) শাবান মাসের চেয়ে অধিক সওম আর কোন মাসে রাখতেন না। তিনি (প্রায়) পুরো শাবান মাস সওম রাখতেন। তিনি বলতেন: “তোমরা এমন আমাল গ্রহণ কর যা তোমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে। কারণ, আল্লাহ তাআলা বিরক্ত হন না যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও। নবী (ﷺ) এর নিকট এমন নামাযই পছন্দনীয় যা নিয়মিতভাবে আদায় করা হয় যদিও তা সল্প হয়। তাঁর নিয়ম ছিল, যখন তিনি কোন নামায পড়তেন নিয়মিতভাবে তা পড়তেন।
গ) উসামা বিন যায়দ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনাকে শাবান মাসে যে পরিমান সওম পালন করতে দেখি অন্য মাসে তা দেখি না। এর কারণ কী? তিনি বললেন: “রজব এবং রামাযানে মধ্যবর্তী এ মাসটি সম্পর্কে মানুষ উদাসিন থাকে। অথচ এটি এত গুরুত্বপূর্ণ মাস যে, এ মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে মানুষের আ‘মাল সমূহ উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি চাই সওম অবস্থায় আমার আ‘মাল উঠানো হোক।”
ঘ) আবু হুরায়রা হতে বণির্ত। রাসূল (ﷺ) বলেছেন: “শাবান মাস অধের্ক হয় গেলে তোমরা সওম রাখিও না।” এ হাদীসের অর্থ হল: যে ব্যক্তি শাবান মাসের প্রথম থেকে সওম রাখে নি সে যেন অর্ধ শাবানের পর আর সওম শুরু না করে করে। তবে যে ব্যক্তি শাবান মাসের শুরু থেকে সওম রেখেছে, বা যার উপর গত বছরের সওম কাজা আছে অথবা যার প্রতি সোম ও বৃহ:বার সওম রাখা অভ্যাস সেও পনের তারিখের পর রাখতে পারে।
ঙ) কারো যদি রামাযানের সওম ছুটে যায় তবে সে তা শাবান মাসে কাযা করে নিতে পারে। যেমন, আবু সালামা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা কে বলতে শুনেছি, আমার রামাযানের কিছু সওম বাকি থাকত। সেগুলো আমি শাবান ছাড়া কাযা করতে পারতাম না।অর্থাৎ আয়েশা গত রমাযানের ছুটে যাওয়া ফরজ রোযাগুলো শাবান মাসে কাযা করতেন।
হাদ্দাব ইবনু খালিদ (র) ...... ইমরান ইবনু হুসায়ন থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) তাকে অথবা অপর কাউকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি শাবান মাসের মধ্যভাগে সওম পালন করেছিলে? তিনি বললেন, না । তখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ যখন-তুমি সওম পালন করনি, তখন দুই দিন সওম পালন করে নিও ।রমজানের সওম ফরজ সওম। রমজান ব্যতীত অন্য আরো সওম আছে যেগুলো সুন্নত। তবে রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রমজান ব্যতীত অন্য সময় মাস ব্যাপী সওম পালন করেননি।
হাদিসে এসেছে—তিনি বললেন: ‘শাবান’ রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যাতে মানুষ সওম সম্পর্কে উদাসীন থাকে।সহিহ মুসলিম :: হাদিস ২৬৪১ । মাসে নফল সিয়াম রাসূল (ﷺ) বেশী করতেন? নিম্ন বর্ণিত
সিয়াম তিনি পালন করছেন : ১. শাওয়াল মাসের ৬টি রোযা ২. যিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশকের
সিয়াম ৩. আরাফার দিনের সওম ৪. মুহররম মাসের সওম ৫. আশুরার সিয়াম ৬. শাবান মাসের সওম
৭. প্রতি মাসে ৩ দিন সিয়াম ৮. সোমবার ও বৃহস্পতিবার সিয়াম ৯. একদিন পর পর সিয়াম
১০. বিবাহে অসমর্থদের সিয়াম।এসময় নফল রোজা ব্যাতীত কায রোজাও রাখা যায়। বিশষ করে মহিলাদের
ভাংতি রোজা পূরণ করার এটি উত্তম সময়।
লেখকঃমমিনুল ইসলাম মোল্লা,কলামিস্ট, গবেষক ও সাংবাদিক।

No comments