প্রসঙ্গঃজাতিসংঘ মিশনে দেবিদ্ধারের এলাহাবাদ
প্রসঙ্গঃজাতিসংঘ মিশনে দেবিদ্ধারের এলাহাবাদ
শনে দেবিদ্বারের এলাহাবাদমমিনুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক, কলামস্টি ও সাহিত্যিক,কুমিল্লা ।।
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৬টি শান্তিরক্ষী কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রায় ১০ হাজার সেনা সদস্য কাজ করছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে ৪০টি দেশে ৫২টি শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের ১ লাখেরও বেশি গর্বিত সৈনিক বিশেষ অবদান রাখছেন। তাদের মধ্যে ১১১ জন শাহাদাত বরণ করেছেন। ১৯৮৯ সালে নামিবিয়ায় বাংলাদেশ বাহিনীর নেতা লে. কর্নেল ফয়জুল করিম মারা যান। তিনি বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ। এসব মিশনে বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো কুমিল্লার দেবিদ্বারের এলাহাবদের নাগরিকগণও প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছেন। তবে কেউ এ পর্যন্ত শান্তি মিশনে মারা যান নি। মরহুম আজগর আলী চেয়ারম্যান এলাহাবাদের প্রথম ব্রিটিশ সৈনিক ছিলেন। পাকিস্তান শাসনামলে আবদুস সালাম ভূইয়া সুনামের সাথে সেনা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সার্জেন্ট মফিজুল ইসলাম ভূইয়া চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি জাতিসংঘ মিশনে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। পুরাতনদের পাশাপাশি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কবির মুন্সী ও দেশ সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। ১৯৮৮ সালে সর্বপ্রথম ইরাক ও নামিবিয়ায় বাংলাদেশের সৈনিকদের পাঠানো হয়। ১৯৯০ সালে কুয়েত ও সৌদি আরবে যান্ত্রিক পদাতিক বাহিনী পাঠানো হয়। এ বাহিনীতে এলাহাবাদের সার্জেন্ট তমিজ উদ্দীন অংশগ্রহণ করেন। বর্তমান নামিবিয়া, কম্বোডিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, মোজাম্বিক ও প্রাক্তন যুগোশ্লাবিয়া, লাইবেরিয়া, হাইতি, তাজাকিস্তান, পশ্চিম সাহারা, সিয়েরালিয়ন, কসোবো, জর্জিয়া, পূর্ব তিমুর, কঙ্গো, আইভোরী কোস্ট ও ইথিওপিয়ার শান্তি রক্ষায় এলাহাবাদ গ্রামের সন্তানরা প্রশংসনীয় ভাবে কাজ করেছেন। আবদুর রাজ্জাক সৌদি আরব (১৯৯০), কুয়েত (১৯৯৮), সৈনিক আবুল কালাম আজাদ, কঙ্গো, লাইবেরিয়ায় কাজ করেছেন। বর্তমানে মিশনে রয়েছেন শাহজালাল ও শাহপরান। আলমগীর হোসেন কুয়েতে ৩ বছর নিয়োজিত ছিলেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও শান্তি রক্ষা বিভাগের প্রধান হারভি ল্যাডসাস ও আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেল আমীরা হক বলেন “বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে অংশগ্রহনকারী সেনা ও পুলিশ সদস্য এখনও যারা কাজ করে চলছেন তাদের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জানাই। আমরা ধন্যবাদ জানাই তাদের পরিবার পরিজনের প্রতিও, যারা অব্যাহত ভাবে সমর্থন যুগিয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবহিনীতে বিশেষ অবদান রাখেন এলাহাবদের সার্জেন্ট (অব.) সফিকুল ইসলাম, জামাল হোসেন, আবুল কালাম, খোরশেদ আলম, অব. কর্পোরাল, আবদুল মতিন ও আবদুল জলিল। বিশিষ্ট খেলোয়াড় আবু মুছা সার্জেন্ট হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাহাবাদের প্রাক্তন ও বর্তমানে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০ জন। তাদের মধ্যে ৫ জন বর্তমানে বিভিন্ন মিশনে কর্মরত রয়েছেন। সার্জেন্ট আবু মুছা বলেন, বর্তমানে কমিশন অফিসার হিসেবে একজন রয়েছেন। নন কমিশন র্যাঙ্কের মধ্যে অধিকাংশই সৈনিক পদে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া ল্যান্স কর্পোরাল, কর্পোরাল ও সার্জেন্ট হিসেবে কেউ কেউ নিয়োজিত রয়েছেন। জানুয়ারি ২০০৪ সালে বিবিসি জাতিসংঘে বাংলাদেশ ফোর্সকে শান্তিরক্ষী বাহিনীর মজ্জা হিসেবে বর্ণনা করে। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের সৈনিক সবচেয়ে বেশি । তারা বিশ্ব শান্তির জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছেন।
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক ও সাংবাদিক,
মোবাইলঃ-০১৭১১-৭১৩২৫৭ ই-মেইল সধসরহসড়ষষধয@ুধযড়ড়.পড়স
- See more at: http://weeklyamod-bd.com/
No comments