তাওবা: গোনাহ থেকে মুক্তির মহান দ্বার

 তাওবা: গোনাহ থেকে মুক্তির মহান দ্বার

//মমিনুল ইসলাম মোল্লা ,সাংবাদিক ,কলামিস্ট ও ইসলামী চিন্তাবিদ। কুমিল্লা।।

মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। কখনো সচেতনভাবে, কখনো অজান্তে আমরা গোনাহ করে ফেলি। কিন্তু আল্লাহ্‌র দরবার সবসময় খোলা থাকে সেই বান্দার জন্য, যে আন্তরিকভাবে ফিরে আসতে চায়। ইসলামে এই ফিরে আসার নাম তাওবা।


তাওবার অর্থ ও গুরুত্ব

তাওবা মানে—গোনাহের জন্য অন্তরে গভীর অনুশোচনা, সাথে সাথে সেই পাপ থেকে বিরত থাকা এবং ভবিষ্যতে আর না করার দৃঢ় সংকল্প। আল্লাহ্‌ তাআলা কুরআনে বলেন,


> “হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।” (সূরা নূর: ৩১)




রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,


> “প্রত্যেক আদম সন্তানই গোনাহ করে, আর সেরা গোনাহগার তারা, যারা তাওবা করে।” (ইবনে মাজাহ)




তাওবার শর্ত

ইসলামী শরীয়ত তাওবার তিনটি মূল শর্ত উল্লেখ করেছে—

১. গোনাহ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বিরত থাকা।

২. অতীতের পাপের জন্য আন্তরিকভাবে অনুশোচনা করা।

৩. ভবিষ্যতে পুনরায় সেই পাপে না ফেরার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

যদি কারো হক নষ্ট হয়, তবে তা ফিরিয়ে দেওয়া বা ক্ষমা চাওয়া আবশ্যক।


তাওবার উপকারিতা

তাওবা শুধু গোনাহ মোচনই করে না, বরং জীবনে প্রশান্তি, আল্লাহর নৈকট্য এবং দুনিয়া-আখিরাতে সাফল্য এনে দেয়। কুরআনে এসেছে,


> “তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর দিকে ফিরে এসো, যাতে তিনি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদেরকে উত্তমভাবে ভোগ করতে দেন।” (সূরা হুদ: ৩)




তাওবা দেরি না করার আহ্বান

পাপ যত ছোটই হোক, দেরি না করে তাওবা করা উচিত। কারণ মৃত্যু কবে আসবে তা কেউ জানে না। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,


> “আল্লাহ্‌ সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত তাওবা গ্রহণ করবেন।” (মুসলিম)




শেষ কথা

তাওবা কোনো এককালীন কাজ নয়—এটি প্রতিদিনের আমল। ছোট-বড় সব গোনাহের জন্য নিয়মিত আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ আল্লাহ্‌ বারবার গোনাহ মাফ করেন এবং তাঁর বান্দাকে ভালোবাসেন, যদি সে আন্তরিকভাবে ফিরে আসে।


আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্যিকার তাওবার তাওফিক দিন।

লেখক পরিচিতি: মমিনুল ইসলাম মোল্লা ,সাংবাদিক ,কলামিস্ট ও ইসলামী বিষয়ক লেখক,কুমিল্লা।।

No comments

Theme images by mammuth. Powered by Blogger.