কুমিল্লার দেবিদ্বারের সেরা স্কুল :দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন আহমেদ বালিকা বিদ্যালয়
মমিনুল ইসলাম মোল্লা 

কুমিল্লা জেলার আওতাধীন দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি দেবিদ্বার উপজেলা অফিসের উত্তর দিকে অবস্থিত। ১৯৭২ স ালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে বিদ্যালয়টি ছিল জুনিয়র মাধ্যমিক  বিদ্যালয়। ১.১১.৯৭২ সালে এটি জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করে।  ১.১.১৯৭৩ সালে  বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিনত হয়।  ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে  ভোকেশনাল শাখা অনুমোদন লাভ করে। 

অবস্থান: সমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টির পূর্বে দেবিদ্বার আজগর আলী মুন্সি গার্লস হাই স্কুল, পশ্চিমে বাঙ্গুরী হাই স্কুল, উত্তরে দেবিদ্ধার রেয়াজ উদ্দিন পাইলট হাইস্কুল এবং পশ্চিমে হাজী আবিদ আলী হাই স্কুল অবস্থিত।
পটভ‚মি: নারী জাগরণের পথিকৃত বেগম রোকেয় শাখাওয়াত হোসেন (১৮৮০-১৯৩২)। তিনি ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর ৫ জন ছাত্রী নিয়ে ভাগলপুরে “শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ” স্থাপন করেন। কুমিল্লায় নারী জাগরণের পথিকৃত বিশ্বের একমাত্র মহিলা নবাব বেগম ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী (১৮৩৪-১৯০৩) কুমিল্লায়  বেগম রোকেয়ার জন্মের ৮ বছর পূর্বে ১৮৭৩ সালে নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষে  ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এ বিদ্যালয় সম্পর্কে বাংলাপিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে“এটি উপমহাদেশে বেসরকাভিাবে প্রতিষ্ঠিত মেয়েদের প্রাচীনতম স্কুলগুলোর অন্যতম।” কুমিল্লা সদরের পর উপজেলাগুলোতে প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দেবিদ্বার গার্লস স্কুলটি অন্যতম। 
 সম্পদের পরিমান: তৎকালীন সময়ে অত্র এলাকায় কোন কোন বালিকা বিদ্যালয় ছিলনা। এ বিদ্যালয়ের সম্পদের পরিমান ১.৬৫ একর। উক্ত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন সার্কেল অফিসার, জনাব রেজাউল করিম, ডাক্তার আ:আলিম সহ এলাকাবাসী বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৩টি টিন শেড, ২টি দুইতলা, ও ৩টি তিন তলা বিল্ডিং রয়েছে। দ্বিতলা বিল্ডিংগুলো দ্বিক্ষ বিশিষ্ট, প্রথম তৃতীয় তলা বিল্ডিংটি ৬ কক্ষবিশিষ্ট ও অন্যটিতে ৫টি কক্ষ রয়েছে। 
ভেকেশনাল: এখানে ৩টি ট্রেডসহ ভোকেশনাল শাখা চালু আছে। ১৯৯৭ সাল থেকে এখানকার ছাত্রীরা ৯ম ও ১০ শ্রেণিতে ভোকেশনাল বিভাগে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে।বর্তমানে  ৯ম শ্রেণিতে ভোকেশনাল শাখায় ৯৯ জন, এবং ১০ম শ্রেণিতে ৬৮ জন ছাত্রী ভোকেশনাল শাখায় লেখাপড়া করছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রী সংখ্যা: প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে উক্ত বিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩০ জন। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শেুণতে ৩২১ ৭ম-৩৩৯, ৮ম-৩২৩, ৯ম-১৭১, এবং ১ম শ্রেণিতে ১৮৯ জন ছাত্রী লেখাপড়া করে।   বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রীদের অভিভাবকদের সাথে টেলিফোনে আলাপ করা হয়। এছাড়া পত্র যোগাযোগরে মাধ্যমে উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ের বালিকাদের উপস্থিতির হার ৮৬%। ক্লাশ ক্যাপ্টিনের মাধ্যমে এখানে শ্রেণি নেতৃত্বের বিধান চালু রাখা হয়েছে। সেজন্য বছরের শুরুতে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেণিতে একজন করে শ্রেণি ক্যাপ্টিন নির্বাচিত করা হয়। ক্যাপ্টিন নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বেছে নেয়া হয়। গরীব ও মেধাবি ছাত্রীরা এখানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৩০% ছাত্রীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়। ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে প্রায় ৪০০ জন ছাত্রী উপবৃত্তি পাচ্ছে। 
  শ্রেণিকক্ষের বিবরণ :৩টি অফিস কক্ষ, ১টি বিজ্ঞান ল্যাব, ১টি কম্পিউটার ল্যাব, ১টি নামাজের ঘর, ১টি লাইব্রেরি, ও ২০টি শ্রেণি কক্ষ রয়েছে।  বিদ্যালয়ে যথেষ্ট পরিমাণে শিক্ষা সামগ্রী রয়েছে। ছাত্রীদের পড়া বুঝিয়ে দেয়ার সুবিধার্থে বø্যাকবোর্ডের কোন বিকল্প নেই।  বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে বø্যাকবোর্ড রয়েছে ১৭টি, হোয়াইট বোর্ড রয়েছে ১টি, এছাড়া চার্ট, মডেল, গেøাব, পোস্টার শিক্ষা সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 
পরীক্ষার ফলাফল: দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ফলাফল বরাবরই ভাল। ২০১০ সালে উক্ত বিদ্যালয় থেকে ১৫৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্য থেকে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩৩জন। পাশের হার ৮৫.২৬%।এপ্লাস পেয়েছে ৫ জন, এ গ্রেড পেয়েছে ৪৩ জন। ২০১১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৪২জন পরীক্ষার্থী পাশ করে, সে বছর পরীক্ষার্থী ছিল১৬২ জন, পাশের হার ৮৭,৬৬%। এবছর ১১ জন জিপিএ-৫ এবং ৩৬ জন জিপএ ৪ পেয়েছে। সর্বশেষ ২০১২ সালের ফলাফলে দেখা যায় ২৯ জন এ প্লাস ও ৫৪ জন এ গ্রেড পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্বল করেছে। এ বছর ১৭৯ জন ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে ১৬০ জন। এছাড়া জেএসসি পরীক্ষায় ২০১০ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৭৫ জন, এতে কৃতকার্য হয় ১৪৭ জন, পাশের হার৮৪%। এছাড়া ৪জন এ প্লাস ও ৪০ জন এ গ্রেড পেয়ে এ প্রতিষ্ঠানের ভাল ফলাফলের ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। ২০১১ সালে ১৮ জন ছাত্রী এ প্লাস পেয়েছে, ৭০ জন ছাত্রী এ পেয়ে কৃতিত্ত অর্জণ করেছে। এসময় ২০৭ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে, তাদের মধ্য থেকে ২০০ জন ছাত্রী সাফল্য লাভ করে। 
বিজ্ঞান শিক্ষা: দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করার সুযোগ রয়েছে। এখানে বিজ্ঞান শিক্ষার উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়। এখানে জীব বিজ্ঞান, প্রাণি বিজ্ঞান, কৃষি বিজ্ঞান, গনিত, কম্পিউটার বিষয়ে আলাদা আলাদা শিক্ষক রয়েছেন।এখানে একটি সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার রয়েছে। এখানে ১টি মাইক্রোস্কোপ, ১২০ টি টেস্টিটিউব, ৭টি কম্পিউটার, ২টি প্রিন্টার, ও ৫টি ইউপিএস রয়েছে।
সহশিক্ষা কার্যক্রম: শিক্ষা, সংস্কৃতি ,ক্রিড়া, মানবিক, গুণাবলী, ও উন্নত মানসিকতা সৃষ্টি এবং বিকাশে বিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তপক্ষ অতিশয় যতœশীল রয়েছেন। বিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দৈনিক সমাবেশ, বার্ষিক ক্রিড়াও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অন্যতম। এ বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রমের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হয়। ছাত্রীদের মেধা ও মনন বিকাশের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়। এ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ৩টি ভলিবল সেট, ২টি ফুটবল, ৪টি ব্যাডমিন্টন রয়েছে।
বৃত্তি লাভ:২০০৯ সালের ৮ম শ্রেণির ছাত্রীদের মধ্য থেকে ১৮ জন ছাত্রী মেধা ও সাধারণ বৃত্তি লাভ করে। ২০১০ সালেও উক্ত বালিকা বিদ্যালয় থেকে  ১৮ জন ছাত্রী বৃত্তি লাভ করেছে। ২০১১ সালের পরীক্ষার্থীরা আরো বেশি উদ্দীপ্ত হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারা আগের রেকর্ড ভঙ্গ কওে ২৯ জন  মেধা ও সাধারণ বৃত্তি লাভ করতে সক্ষম হয়।
কৃতি ছাত্রী: এ বিদ্যালয়ের  ছাত্রীদের মধ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ম্যাজিষ্ট্রেট, ও জজ রয়েছে। এছাড়া কয়েকজন ছাত্রী স্বামীসহ বিদেশে কৃতিত্তের সাথে স্বস্ব পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জানান-এ বিদ্যালয়ের ছাত্রী উম্মে হাবিবা,(ম্যজিষ্ট্রেট), মোসাম্মৎ মাবিয়া (এমবিবিএস), সিরাজুম মুনিরা সহকারী জজ ও সোহেলী সুলতানা উঞ্জিনিয়ারিং পেশায় নিয়োজিত থেকে দেশের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।
শিক্ষক-শিাক্ষকাবৃন্দ: এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছেন একঝাঁক অভিজ্ঞশিক্ষক মন্ডলী। তারা সবাই যোগ্য,দক্ষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ। এখানে প্রধান শিক্ষক ১জন, সহকারী প্রধান শিক্ষক ১জন, সহকারী শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান) ৯ জন। বাইলোজি শিক্ষক ১ জন, গনিতের শিক্ষক ২জন, ধর্মীয় শিক্ষক ১জন, এবং শরীরচর্চা শিক্ষক রয়েছেন ১জন। শিক্ষকদের সম্পর্কে আরো জানা যায়, এখানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক ১৬ জন। পিবিএম টেনিং করেছেন ১৬ জন, এসবিএ ট্রেনিং করেছেন ১৪ জন, দুজন নতুন শিক্ষক এখনও টেনিং এর সুযোগ পান নি। ভোকেশনাল শাখায় শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান একজন মহিলা। তার সাথে রয়েছেন আরো ১২জন মহিলা শিক্ষক। অর্থাৎ ১৩ জন শিক্ষিকা এখানে কর্মরত রয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠানে ৫ জন এমএ পাশ শিক্ষক রয়েছেন। তারা হচ্ছেন-সাবিনা ইয়াসমিন, বাবু দিলিপ চন্দ্র দত্ত, শাহ আলম, মো: সেলিম, ও খাদিজা বেগম। এখানে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে ১জন এবং ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারি রয়েছে ৫ জন। 
পরিদর্শন: এ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা নিয়মিত প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। এছাড়া গত ৫ বছরে উপজেলা নির্বাহি অফিস ৫বার এ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। সর্বশেষ পরিদর্শন করা হয়েছে ৭ জুলাই ১২। ডিইও অফিস পরিদর্শন করেছে ৪ বার। সর্বশেষ পরিদর্শন সম্পন্ন হয় ২৯ অক্টোবর ১১। ইউএসইও ১৫ ডিসেম্বর১১ সর্বশেষ ভিজিট করেছে, এবং ইউএএস ৫ বার পরিদর্শন করেছে। গত ৫ বছরে ৫বার আন্ত অডিট হয়েছে, অডিট ফার্ম ২০১০ সালের ৫ মে একটি অডিট ফার্ম অডিট সম্পন্ন করেছে। সকল প্রকার ভিজিট ও অডিট রিপোর্টে বিদ্যালয়টির প্রতি সন্তোষ প্রকাশ কারা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা পরিচিতি:এ পতিষঠানের নামের সাথে বর্তমান সাংসদ এ বি এম গোলাম মোস্তাফার পিতা সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী জনাব মফিজ উদ্দিনের নাম জড়িত রয়েছ। তার সম্পর্কে এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে-তিনি ১৮৯১ সালে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯১৯ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ পাশ করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএল পাশ করে কুমিল্লা জেলা বারে ওকালতি করেন। তিনি ১৯৩৩ সালে মুসলিম লীগে যোগদান করেন, এসময় তিনি ত্রিপুরা জেলা মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৩৮ সালে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য, ১৯৪০ সালে শিক্ষা বিষয়ক পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি নিযুক্ত হন, ১৯৪৬ সালে তিনি পুনরায় বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য, পাকিস্তান আমলে তিনি পুর্ব পাকিস্তানের ত্রাণ, পুনর্বাসন, রেজিষ্ট্রেশন ও কারাগার বিষয়ক মন্ত্রী হন, ১৯৫৪ সালে তিনি পাকিস্তান পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নিযুক্ত হন, ।তিনি ১৯৬ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ইন্তেকাল করেন। তিনি সামাজিক অবদানের জন্য ব্রিটিশ শাসনামলে খান সাহেব ও খান বাহাদুর এবং পাকিস্তান শাসনামলে সিতারাই কাইদে আজম খেতাব লাভ করেন।
 
বিদ্যালয়ের আয়ের উৎস: এ বিদ্যালয়ের আয়ের প্রধান উৎস ছাত্রীদের নিকট থেকে সংগ্রহীত বেতন। এখানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৮ম শেণি পর্যন্ত ভর্তি ফি ৬০ টাকা রাখা হয়। এছাড়া প্রত্যেক ছাত্রী থেকে ২৬০ টাকা শেসন ফি আদায় করা হয়। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য রাখা হয় ১২০ টাকা। নিয়মিত মাসিক বেতন ৬০ টাকা। ৯ম ও ১০ম শেণিতে বেতন ৭০ টাকা, ভর্তি ফি ৭০ টাকা, সেশন ফি ২৮০ টাকা এবং পরীক্ষার ফি ১৫০ টাকা। ছাত্রীদের বক্তব্য: ৬ষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস ক্যাপ্টিন  বলে-আমরা আমাদের এ বিদ্যালয়কে শুধুমাত্র দেবিদ্বারের মধ্যে নয় সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে চাই। ৭ম শ্রেণির শ্রেণি নেতা বলে- এ বিদ্যালয়ের কোন ছাত্রীর বিএ পাশের আগে বিয়ে হউক তা চাই না। ৮ম শেণির ক্লাশ ক্যাপ্টিন বলে- এ বিদ্যালয়ে কোন ছাত্রীনিবাস নেই তই দূরের ছাত্রীরা এখানে ভর্তি হতে চায় না। তাই এখানে একটি হোস্টেল নির্মান করা প্রয়োজন। ৯ম শ্রেণির মেধাবী  ছাত্রী বলে-আমাদের বিদ্যালয়টি খেলাধুলায় ভাল হলেও আন্ত:স্কুল প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা আমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারছি না। ১০ম শ্রেণির ছাত্রী বলে-আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠনটিকে দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই। 
ছাত্রীদের বক্তব্য: ৬ষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস ক্যাপ্টিন নূরজাহান খানম বলে-আমরা আমাদের এ বিদ্যালয়কে শুধুমাত্র দেবিদ্বারের মধ্যে নয় সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে চাই। ৭ম শ্রেণির শ্রেণি নেতা সায়মা ইসলাম বলে- এ বিদ্যালয়ের কোন ছাত্রীর বিএ পাশের আগে বিয়ে হউক তা চাই না। ৮ম শেণির ক্লাশ ক্যাপ্টিন কানিজ ফাতিমা বলে- এ বিদ্যালয়ে কোন ছাত্রীনিবাস নেই তই দূরের ছাত্রীরা এখানে ভর্তি হতে চায় না। তাই এখানে একটি হোস্টেল নির্মান করা প্রয়োজন। ৯ম শ্রেণির মেধাবী  ছাত্রী সিফাত সায়মা বলে-আমাদের বিদ্যালয়টি খেলাধুলায় ভাল হলেও আন্ত:স্কুল প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা আমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারছি না। ১০ম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া আক্তার বলে-আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠনটিকে দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই।
পরিচালনা কমিটি: বর্তমান কমিটি গঠন করা হয় ২৯.১২.২০১০ সালে। বর্তমান কমিটির সভাপতি মো:রুহুল আমিন আকন্দ। এ কমিটিতে ব্যবসায়ীদের আধিক্য লক্ষ করা যায়। তারা বিদ্যালয়টির উন্নয়নে সার্বিক ভ‚মিকা রাখছেন।  ২৮/১২/২০১২ সালে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে।
প্রধান শিক্ষিকার বক্তব্য:দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা ও জ্ঞানের আলো প্রসারিত হয়েছে এবং সৃষ্টি হয়েছে অনেক বিদুষি মহিলা।বিদ্যালয়ের সমস্যার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগম বলেন-বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, ছাত্রীদের কোন হলরুম নেই, ছাত্রীদের থাকার জন্য কোন ছাত্রীনিবাস নেই। আপনি এ বিদ্যালয়টিকে লেখাপড়ার আদর্শ প্রতিষ্ঠান মনে করেন কেন? এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, শিক্ষক -শিক্ষিকাদের আন্তরিকতা, ছাত্রীদের গভীর মনোযোগ , অভিভাবকদের সচেতনতা , ম্যানেজিং কমিটির নজরদারির কারণে এ বিদ্যালয়টি শুধুমাত্র বালিকা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যেই নয় জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় বরবরই প্রথম স্থান অধিকার করছে।
 
লেখক: রাষ্ট্রবিজ্ঞানের  প্রভাষক, সাংবাদিক কুমিল্লা