ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে দ্বীন শিক্ষা
ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে দ্বীন শিক্ষা
মমিনুল ইসলাম মোল্লা ।।ইউটিইব একটি আদান প্রদানকারী ওয়েবসাইট। ১৪ ফেব্রæয়ারী ২০০৫ থেকে এটি বিশ্বব্যাপী সেবা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়্া, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এর সদর দপ্তর। এতে শিক্ষা, বিনোদন, খেলাধুলা, ইসলামিক , শিশুতোষ কার্টুনসহ সব ধরণের ভিডিও পাওয়া যায়। বাংলাদেশে জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল “ আরটিভি ড্রামার” সাবস্ক্রাইবার ১০ লাখের বেশি। !ূওংষধসরপ ংযড়শঃর “নামের একটি ইসলামিক চ্যানেল ১ লক্ষ সাবস্ক্রইবারের সীমা অতিক্রম করার গৌরব অর্জণ করেছে। সাধারণ গানগুলোর পাশাপশি ইসলামিক গানগুলোও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। প্রথমবারের মত একটি গান দেড় কোটি ভিউয়ার পেতে সক্ষম হয়েছে। গানটি হচ্ছে -“ হঠাৎ যদি যাই মরিয়া ! “ চড়ংড়হহফবৎ ধিু”
নামের একটি চ্যানেল ২০১১ সাল থেকে নিরলসভাবে ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছে। এর ভিউয়ারের সংখ্যা অর্ধ লক্ষ। ইসলামিক চ্যানেলগুলো বহু প্রকিূলতালতা সত্বেও বাঙ্গালী দর্শকদের সহযোগীতায় এগিয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে করলে দ্বীনী কাজের খেদমতে আপনিও অংশ নিতে পারেন। যে কোন ভিডিও চ্যানেলের ইসলামিক ভিডিওগুলো শেয়ারের মাধ্যমে আপনি আপনার বন্ধুদের নিকট পৌঁঁ^ছে দিয়ে আপনিও পূণ্যের অধিকারী হতে পারেন। কেননা কোন মুসল্লিকে মসজিদের রাস্তা দেখিয়ে দিলে তিনিও কিছুটা সোয়াব পাবেন। এছাড়া ষরশব দিয়ে, পড়সসবহঃ করে এবং ংঁনংপৎরনব করে দ্বীনের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন। মানুষ মারা গেলে তার আমলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলেও কিছু আমল চলতে থাকে এগুলোকে “সাদকায়ে জারিয়া ” বলা হয়। আপনি যদি কোন আলেম হন , কোন যায়গায় ধর্মীয় বক্তব্য দিলে উপস্থিত লোকজন তা আমল করলে তিনি অধিক সোয়াবের অধিকারী হবেন। আর এ বক্তব্যটুকু যদি ণড়ঁঃঁনব চ্যানেলে দেয়া যায় তা থেকে লক্ষ লক্ষ লোক দ্বীনি জ্ঞান অর্জণ করতে পারেন। আপনি মারা গলেও এ সোয়াব চলতে থাকবে। তাই দ্বীন প্রচারের কাজও “সাদকায়ে জারিয়ার” অর্ন্তভূ’ক্ত। ণড়ঁঃঁনব চ্যানেলের কোন ভিডিও আপনি ফেসবুকে শেয়ার দিলেও সোয়াব পাবেন। কেউ কেউ বলেন মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট অমুসলিমরা আবিষ্কার করেছে তাই এগুলো মুসলমানরা ব্যবহার করা উচিত নয়। এটি মূলত খোড়া যুক্তি । একথা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত যে, মানুষ কোন বস্তু সৃষ্টি কিংবা ধ্বংশ করতে পারে না। শুধুমাত্র পরিবর্তন করে ব্যবহার উপযোগী করতে পারে মাত্র। দুনিয়াতে যা কিছু নতুন দেখা যায় আমরা সেগুলোকে মানুষের আবিষ্কার বলে মনে করি। এগুলো মূলত আল্লাহরই সৃষ্টি। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন বলেন, তিনি সেই সত্তা যিনি সৃষ্টি করছেন তোমাদের জন্য, পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব কিছু। ( বাকারা২/২৯)। সুতরাং মুসলিম কিংবা অমুসলিম যাই মানুষের কল্যাণে আবিষ্কার হোক না কেন সবকিছুই আল্লাহর নেয়ামত। এসব নেয়ামতকে ভাল কাজে লাগাতে কোন আপত্তি নেই। ইসলামিক ণড়ঁঃঁনব চ্যানেল পরিচালনা করতে গিয়ে অনেকেই প্রথম প্রথম হতাশায় ভোগেন। কারণ এত কষ্ট করে ভিডিও বানান কিন্তু যথেষ্ট পরিমানে ষরশব পড়সসবহঃ ংঁনংপৎরনব পান না। ণড়ঁঃঁনব
এর বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে একটি চ্যানেলকে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে। এ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে চ্যানেলটি “মনিটাইজেশন” পাবে না। তবে তাকওয়াবান লোকেরা চ্যানেল পরিচলনা করলে হতাশায় ভোগেন না। তারা জানেন তাদের মাধ্যমে কেউ সহিহ আকিদার সন্ধান লাভ করলে তারা আল্লাহর কাছ থেকে পাবেন মহাপুরস্কার। একটি চ্যানেলে দর্শকগণ কি চান তা কমেন্টের মাধ্যমে ফুটে উঠে। চড়ংড়হফবৎ ধিু ইউটিউব চ্যানেলে আমেরিকার নিউইয়র্ক থেকে সালমান আহম্মদ মন্তব্য করেছেন, আমরা বাংলা ভাষায় পরিচালিত বিভিন্ন ধরণের চ্যানেলে ঢু মারি তবে আমাদের উচিত বাংলাদেশী মুসলমান হিসাবে ইসলামিক বাংলা চ্যানেলগুলো ংঁনংপৎরনব করে তাদেরকে উৎসাহ দেয়া কারণ সাবস্ক্রাইবার হচ্ছে একটি চ্যানেলের জন অক্সিজেনস্বরুপ।
বাংলাভাষায় পরিচালিত ইসলামিক ইউটিউব চ্যানেলগুলো বাঙ্গালী দর্মকদের সহযোগীতায় এগিয়ে চলছে। আই আর এ চ্যানেলটি যাত্রা শুরু করেছে ২০১২ এটি ইতিমধ্যে ১ লক্ষ হাজার সাবস্ক্রাইবার সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। ইসলামিক লেক্চার বিডি লিখে ইউটিউবে সার্চ দিলে একটি বাংলা ইসলামিক চ্যানেল আসবে। এবাউটে গিয়ে দেখবেন এর সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১লক্ষ ১ হাজার। এ চ্যানেলটি চলছে ২০১৬ সাল থেকে। সহিহ আকিদা নামে আরেকটি চ্যানেল আছে। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১ লক্ষ ৩ হাজার জন। এছাড়া সত্যের দিকে আহবান মুসলমানদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে এর সাবস্ক্রাইবার ১ লক্ষ ২৩ হাজার। ছোট ছোট প্রশ্নোত্তর দিয়ে সাজানো হয়েছে “চড়ংড়হফবৎ ধিু নামক চ্যানেলটি। এখানে রয়েছে কোরোনের আয়াতের বাংলা অনুবাদ, তাফসীর, বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, ইসলামী হামদ, নাত, প্রভৃতি। এগুলো দেখার মাধ্যমে অনুসন্ধিৎসু মুসলমান তার ঈমান - আকিদার সংশোধন করতে পারেন। এছাড়া এখানে কালিমার শর্ত, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাতের উপর মাসলা-মাসায়েল রয়েছে। শিশুরা আনন্দের মাধ্যমে শিখ্েেত পছন্দ করে। ণড়ঁঃঁনব এর মাধ্যমে শব্দ ও ছবির দেখে অতি সহজে ইসলাম সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। এজন্য ইসলামিক চ্যানেলগুলো ছোট ছোট প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক ধর্মীয় আলোচনা দিতে পারে। এছাড়া শিক্ষামূলক ইসলামিক কার্টুন, কোরানের গল্প, হাদিসের কাহিনী দিতে পারে। ইসলামিক কুইজের মাধ্যমেও শিশুদেরকে ধর্মীয় জ্ঞান দেয়া যেতে পারে, তাহলে তারা আগ্রহ ভরে অনুষ্ঠান দেখবে। মানুষের মনে দাগ কাটার ক্ষেত্রে দেখা ও শোনার প্রভাব বেশি। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ভিডিওি প্রকাশ করে তা প্রচার করলে দ্বীনের দাওয়াতে তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
।লেখকঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক , সাংবাদিক ও ধর্মীয় গবেষক,
কুমিল্লা।
No comments