শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা
শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা
মানুষকে আল্লাহ আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। সে হিসেবে মানুষ স্বাধীনভাবে চিন্তা –ভাবনা করতে পারে। ফলে মানুষ বালো কিংবা মন্দ দুটোই গ্রঞণ করতে পারে। ফলে মানুষ ভালো কিংবা মন্দা দুটোই গ্রহণ করতে পারে। এ স্বাধীনতার সুযোগে নিচ্ছে শয়তান। শয়তান কুমন্ত্রণা দিয়ে মানুষকে প্রভাবিত করে। এটা শুধ বর্তমান সময়েই নয় পূর্বেও ছিল। তাদেও ব্যাপাওে আল্লাহ বলেন ( আল জ্বিনঃ ৬ ) অনেক মানুষ অনেক জ্বিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জ্বিনদেও আত্মম্বারতা বাড়িয়ে দিত। ” কোরান মজিদে শয়তাতান ১ বচন ও বহু বচনে ৮৮ বার ব্যবহৃত হয়েছে।আল্লাহর রহমত বাদে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। বুখারি শরিফে আছে- রাসুলুল্লাহ ( সাঃ ) বলেন- রক্ত যেমনভাবে শিরার মধ্য দিয়ে প্রবাহমান ঠিক তেমনিভাবে শয়তান মানুষের মাঝে প্রবাহমান এবং আমার ভয় হল যে শয়তান হয়ত তোমাদেও অন্তওে কোন কুমন্ত্রণা দেবে, ফলে এ নিয়ে বিভিন্ন কথা উঠবে।” শয়তান সম্পর্কে কারো কারো ধারণা শুধুমাত্র দুস্ট প্রকৃতির লোককেই সে পথব্রস্ট করে। আসলে এ ধারণা ঠিক নয়। প্রতিটি আদম সন্তানকে সে টার্গেট করে। সে আল্লাহকে বলেছে- আমার পালনকর্তা আপনি যেমন আমাকে পথভ্রস্ট করেচেন, আমিও তাদেও সবাইকে পৃতিবীতে নানা সেীন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদেও সবাইকে পথব্রষ্ট করব। তাদেও মধ্যে আপনার একনিস্ঠ বান্দাদেও ব্যাতীত। ৯ হিজর- ১৫/৩৯) । শয়তান আমাদেরকে দারিদ্রতার ভয় দেখিয়ে উন্নত মাসন পদ্ধতির স্বপ্ন দেখিয়ে বিভ্রান্ত করে। একজন মানুষের জন্মেও সাথেই সাথেউ শয়তানরাজ তার জন্য একজন সৈনিক নিয়োগ করে। সে মারা যাওয়ার পর তখন তার ছেলে বা মেয়েকে বাবার সকল অধর্মীয় কাজ ও কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলে তোমার বাবাকেতো সবাই ভাল বলতো। তিনি কি ভুল করেচিলেন ? তুমি তোমার বাবার পথ অনুসরণ করা উচিত। ঐ ব্যক্তিটি তখন সহজেই বাবার স্মৃতি ( ময়তানের সাহায্যে ০০০০ মনে করতে পাওে এবং শয়তানের পরামর্শে কাজ করে। আল্লাহ যখন আদমকে সে গাছটির ফল কেতে নিষেধ করেছিল তখন শয়তান আদমকে বল্ল- “ হে আদম তোমাকে কী এমন একটা গাছের সন্ধান দিব। যার দ্বারা অনন্ত জীবন ও এমন রাজত্ব লাভ হয় যা কখনও ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। অতঃপর আদম সে গাছ থেকে কিছু খেয়ে ফেল্ল (সূরা তোহা ১২০-১২১)। আদমকে সেজদা করতে অস্বীকারকারী ইবলিম জ্বীন- শয়তানের নেতা। তার ব্যপাওে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- “আর আদমকে সেজদা করার জন্য সকল ফেরেশতাকে বলা হলো, সকলেই সেজদা করলো। একমাত্র ইবলিম ব্যাতীত। সে ছিল জ্বিনদেও অন্তর্ভুক্ত। সে আল্লাহর অবাধ্য হলো। ( সূরা- আল কাহফ-৫০ )
শয়তানের প্রদান টার্গেট মানুষকে দিয়ে করানোঃ কুফরি, শিরকি কাজ ও আল্লাহ ও রসুলের দুশমনি করানো। যদি সেটি করাতে ব্যার্ত হয় তবে ময়তান মানুসকে লিপ্ত কওে বিদআতি কাজে, তাতেও ব্যর্থ হলে সে কবিরাগুনাহ হয় এমন কাজে লিপ্ত করে। তাতেও ব্যর্থ হলে মুবাহ ( গোনাহ বা পূণ্য কোনটাই নয় ) কাজে প্রণোদিত করে। যদি তাতেও ব্যর্থ হয় তাহলে অপ্রয়োজনীয় কাজে লিপ্ত করে। শয়তান জ্বিনদেও অন্তভর্’ক্ত । মহানবি ( সাঃ ) বলেছেন, “ তিন ধরণের জ্বিন রয়েছে” একদল যারা সর্বদা আকাশে উড়ে বেড়ায়, আরেকদল যারা সাপ ও কুকুরের আকার ধারণ কওে থাকে এবং তৃতীয় দল পৃথিবীবাসী যারা কোন এক স্থানে বাস কওে বা ঘুওে বেঢ়ায়। ( বায়হাকি ও তাবরানী )শয়তানের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে কিংবা তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলে তার সাথে দুশমনি করতে হবে। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহর নির্দেশ - তোমরা জিহাদ কর শয়তানের পক্ষ অবলম্বনকারীদেও বিরুদ্ধে, ( দেখবে ) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। ৯ নিসা – ৭৬ )।আমাদেও সবসময় ময়তানের বিরোধিতা করতে হবে। যে শয়তানের কতা শুনবে সে তার দলভ’ক্ত হয়ে যাবে। শয়তানের সাতেই তার হাশর হবে। আর তার জন্র প্রস্তুত রয়েছে জ্বলন্ত অগ্নি। রাসুল ( সাঃ ) বলেছেন- তোমাদেও গরগুলোকে কবওে পরিনত করনা। যে ঘরে সূরা বাকারা পাঠ করা হয় সে ঘর থেকে শয়তান পালিয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম-৭৮০)শয়তান সবসময় আমাদেও চলার পথে ল্যাং মারার চেষ্টা করে। বিশেষ কওে ছালাতে, কুরআন তেলাওয়াত করার সময়, রেগে গেলে, সকাল সন্ধায়, নিজগৃহে প্রবেশের সময়, দ্বীনের মৌলিক বিষয়ে সন্দেহ হলে, স্ত্রী সহবাসের আগে, ঘুমানোর সময়, এবং সপ্নযোগে শয়তান মানুষকে বিভ্রান্ত করে। কোরানে বলা হয়েছে শয়তান তোমাদেও প্রকাশ্য শত্রæ। এ শত্রæই আবার কারো কারো বন্দু হয়ে যায়। তবে শয়তানকে যে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে তার আর কোন শত্রæর প্রয়োজন নেই। যে সব লোক ইসলামের প্রচলন, অনুসরণ, ও বাস্তবায়নকে পছন্দ করেনা, শয়তান তাদেও বন্দু হয়ে যায়। শয়তান কাইকে বন্ধু বানাতে পারলে এ মানব বন্ধু দিয়েই অন্য মানুষকে কুমন্ত্রণা দেয়। তারাই মানুষের বন্ধু সেজে মানুষের ক্ষতি করে। “ তারা মানুষের অন্তওে কুমন্ত্রণা দেয় এবং তারা আসে হয়তো মানুষ কিংবা জ্বিনের ভেতর থেকে। ( সূরা নাস- ৫,৬) এ আয়াতে মানুষ শয়তানের কথা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মূলত শয়তান পরিকল্পিতভাবে কাজ করে। হাদিসের আলোকে জানা যায়, পানির উপওে তার সিংহাসন রয়েছে। সেখান থেকে তারা গোটা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করে। যেকানে যতজন সৈনিক প্রয়োজন সেখানে পাঠায়। তারা মানুসকে ফেতনা ফাসাদে লিপ্ত করে। সুতরাং সবচেয়ে বেশি ফেৎনা সৃস্টিকারী ব্যক্তিই শয়তানের কাছে বেশি প্রিয়। শয়তান তার বাহিনী নিয়ে সারা বিশ্বে রাজত্ব করছে। এক্ষেত্রে তাকে সহযোগীতা করছে নিজ সন্তানেরা।, মানুষদেও পক্ষ তেকে যারা শয়তানের গূণে গূণান্বিত, যারা নেক্কারদেরকে গালমন্দ কওে, তিরস্কার কওে, বিদ্রæপ- মমকরা কওে থাকে। ইবাদতকারীদেও মৌলবাদি, বা অন্য কোন নামে অপবাদ দিয়ে তাচ্ছিল্য করে। শয়তান আমাদেরকে দেখতে পায় আমরা তাদেরকে দেখতে পইনা। যারা শয়তানের পূজারি আল্লাহ শয়তানকে তাদেও অভিবাবক বানিয়ে দিয়েছেন। উপসংহারঃ সূরা নাসে কুমন্ত্রণার ব্যাপাওে আরো স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে- এই কুমন্ত্রণাদাতা হতে পাওে মানুষরুপী শয়তান যাদেও চোখে দেখা যায় অথবা অদৃশ্য অশুভ শক্তি যেমন জ্বিন যারা অন্তরের ভেতর থেকে কুমন্ত্রণা দান করে। হাদিসে বর্ণিত আছে- একজন সন্তান জন্ম নেয়ার সাথে সাথে শয়তান এসে উপস্থিত হয়। শয়তান তাকে স্পর্শ করায় সে কেঁদে উঠে। এ শয়তান মৃত্যুও পূর্ব পর্যন্ত অবস্থান করে। তাই সন্তান আদম সন্তানের আজন্ম শত্রæ। তার কবল থেকে মুক্ত থাকতে হলে কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে জীবন গড়তে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে শয়তানের অনিষ্ট থেকে পরিত্রান লাভের তাওফিক দিন- আমিন।
No comments