জান্নাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক আমলসমুহ

জান্নাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক আমলসমুহ

মমিনুল ইসলাম মোল্লা,

আমাদের আদি পিতা ও মাতা জান্নাতে ছিলেন। আমরাও জান্নাতে যেতে চাই। তবে জান্নাতে যাওয়ার পথে অনেক বাঁধা। এ প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করতে পারলেই আল্লাহর রহমতে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব।  একজন মুসলমানকে অবশ্যই আল্লাহ ও তার রাসুল নির্দেশিত পথে ইবাদত করতে হবে। রাসুল সাঃ এর নিয়ম অনুযায়ী সালাত আদায় করতে হবে। এছাড়া আল্লাহর নামে কুরবানী করতে হবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে যবাই করে আল্লাহ তায়ালা তার উপর অভিশাপ বর্ষন করেন। (মুসলিম)। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপর ভরসা করা যাবে না। অঅল্লাহ বলেন,একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা কর যদি তোমরা মুসলমান হয়ে থাক। ( ইউনুস ৮৪)। ইসলামের রুকন সমুহ হতে কোন একটিকে অস্বীকার করলে সে মুসলমান থেকে বেরিয়ে যাবে। সালাত ,সাওম, হজ¦, যাকাত অথবা ঈমানের মূল বিষয় আল্লাহ, রাসুলগণ, ফেরেস্তাগন, কিতাবসমূহ, তাকদীর ও পরকালের বিচারের বিষয়টি কেউ অস্বীকার করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ইসলামের কোন বিধান মুসলমান হয়ে আপনি অপছন্দ করতে পারবেন না। কোন বিধান সেকেলে হয়ে গেছে বলে মনে করা উচিত নয়। আলেমগন একমত হয়েছেন এমন কোন বিষয়ে , লেনদেন, ব্যবসা -বানিজ্য ইত্যাদি বিষয়কে ঘৃনার চোখে দেখা যাবে না। আল্লাহ বলেন, আর যারা কুফুরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে নিশ্চিত ধ্বংস। আর তাদের কর্মফল বরবাদ করে দেয়া হবে। ঐ কারণে যে আল্লাহর নাযিল করা কুরআন বা এর অংশবিশেষকে তারা অপছন্দের দৃষ্টিতে দেখে। ফলে আল্লাহ তাদের সকল নেক আমল বরবাদ করে দিবেন (মুহাম্মদ ৯)। ইসলাম ধর্মের কোন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করা যাবে না। সকল বিধি-বিধান অবনত মস্তকে মেনে নিতে হবে। কোরান মাজিদ বা সহিহ হাদিসের কোন বিষয়ে না বুঝলে তা সঠিকবাবে বুঝার চেষ্টা করতে হবে। কোন ভুল ব্যাখ্যা বা বিরুপ মন্তব্য করা যাবে না। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, বল তোমরা কি আল্লাহ ও তার রাসুলক নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রæপ করেছিলে ? ( কাজেই আজ আমার সামনে ) তোমরা কোন ওজর আপত্তি পেশ করার চেষ্টা করো না। ঈমান আনার পরও ( সে বিদ্রæপের কারণে ) পুনরায় অবশ্যই তোমরা কুফরী করেছ (তাওবা ৬৫)। আল্লাহর সুন্দর নামসমুহ অথবা তার গুনাবলীর কোন একটিকেও অস্বীকার করা অথবা কুরআন – হাদিস দ্বারা প্রমানিত কোন বিধানকে অবহেলা করাও ্ঈমান হ্রাস পাওয়ার কারণ। কোরান হাদিস অনুযায়ী কোন বিচার করা হলে তা খুশি মনে মেনে নেয়া ঈমানদার মুসলমানদেও জন্য কর্তব্য । মানুষের মধ্যে যে কোন ব্যাপারে বিরোধ উপস্থিত হলে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের দিকে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। তাহলেই আমরা সত্যিকারের মুসলমান হতে পারব। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, “ কিন্তু না, ( হে মুহাম্মদ) তোমার রবের শপথ । তারা ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ -বিসম্বাদের মীমাংশার ভার তোমার উপর ন্যাস্ত না করে, অতঃপর তোমার ফয়সালার ব্যাপারে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে , আর তারা সর্বান্তকরনে তার সামনে নিজেদেরকে পূর্ণরুপে সমর্পণ করে( নিসা ৬৫)। আল্লাহ যেসব কাজকে আমাদের জন্য  বৈধ করেছেন সেগুলোকে অবৈধ মনে করা পাপ। তেমনিভাবে বৈধ কাজকে বৈধ মনে করলে আমাদের ঈমানের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। ঊদাহরনস্বরুপ বলা যেতে পারে –আল্লাহ আমাদের জন্য সুদকে হারাম করেছেন এবং ব্যবসাকে হালাল করেছেন। এর বিপরীত  কাজ করলে আপনি আপনার অজান্তেই দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে নির্দষ্ট দোয়া পড়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানোর সময় দোয়া পড়ে ঘুমানো পর্যন্ত সকল কাজের দিক নির্দেশনা রয়েছে ইসলামে। তাই ইসলামকে বলা হয় সম্পূর্ণ জীবন বিধান। আল্লাহ বলেন,  আর যে কেউ, ইসলাম ব্যাতীত অন্য কিছুকে দ্বীন হিসাবে ( অর্থাৎ জীবন বিধান হিসাবে ) গ্রহণ করতে চাইবে ( আল্লাহর সমীপে) কক্ষনো তা কবুল করা হবে না। বরং সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে  ( আল ইমরান ৮৫)। মুসলমানগন তাদের গৃহীত দ্বীন নিয়ে কোন  তামাশা করতে পারবেন না। আপনি যদি তাদেও জিজ্ঞেস করেন তারা বলবে আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করেছিলাম।  কোন কাজে ব্যর্থ হয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। একথা বলা যাবে না – এত পরিশ্রম করলাম আল্লাহ আমাকে সফলতা দিলেন না। অথচ অমুকে অমুকে সহজেই তা পেয়ে গেল। কেউ বলতে পারবেন না আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন আমি তার চেয়ে আরো বেশী পাওয়ার হকদার ছিলাম।  কেউ যদি পাপ করে এবং তা মানুষের কাছে বলে বেড়ায় আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। রাসুল সাঃ বলেন, “ আমার সমস্ত উম্মতকে ক্ষমা করা হবে একমাত্র প্রকাশকারী ব্যাতীত। প্রকাশকারী হলো সেই ব্যক্তি যে রাত্রে পাপ করার পরে আল্লাহ তা গোপন রেখেছেন । কিন্তু সকালে বলে, হে উমুক ব্যক্তি আমি আজকে রাত্রে ঐ কাজ করেছি । সে রাত্রে যখন ঘুমায় আল্লাহ তার পাপকে ঢেকে রাখেন । অথচ সকালে সে তা লোকদের সম্মুখে প্রকাশ করে দেয়। ( বুখারি)। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে যত বেশি আল্লাহর ইবাদত থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে , সে তত বেশি শিরকে লিপ্ত হয়েছে। কারণ আল্লাহর এবাদত , আনুগত্য ও তার স্মরনাপন্ন হওয়া। প্রত্যেকের একটি আশ্রয় কেন্দ্র বা ভরসাস্থল থাকে যাকে সে শ্রদ্ধা করে যার প্রতি তার মহব্বত রয়েছে সেটি যদি হয় শয়তান , তাহলে তার রক্ষা নেই। আল্লাহ বলেন, সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে , যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত ও তার ডাকে সাড়া দেবে না ? আর তারা তাদের ডাক সম্বন্ধে অবহিত ও নয় ( আহকাফ ৫)। প্রবৃত্তির অনুসরন আমাদেরকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করে। আল্লাহ বলেন, তাদের পরে আসল এমন  এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরন করল। সুতরাং শীগ্রই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে( মারইয়াম ৫৯) যারা আল্লাহর বিরুদ্ধাচারন করে আল্লাহর আদেশের তোয়াক্কা না করে তারা জাহান্নামের দিকে ধাবিত হয়। যারা নামাজ বিনষ্ট করে তারা এদের একজন। নামাজ বিনষ্ট করার অর্থ নামাযের সময় বিনষ্ট করা অর্থাৎ যথাসময়ে নামায না পড়া। বিনা ওযরে নামায জমা করা।অরল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট কিছু চাওয়া যাবে না। আল্লাহ বাদে অন্য কেউ আল্লাহর সমকক্ষ ক্ষমতা রাখে না এ ধরণের বিশ^াস অন্তরে পোষণ করা যাবে না। এ সম্বন্ধে আল্লাহ বলেন- “ আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কাউকে ডেকোনা, যে না করতে পারে তোমার কোন উপকার আর না করতে পারে কোন ক্ষতি , আর যদি তা করেই ফেল, তবে অবশ্যই তুমি যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে ( অর্থাৎ তুমি মুশরিক হয়ে যাবে) । কোন ব্যক্তি যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে , সে আল্লাহ বাদে অন্যকে সমকক্ষ দাঁড় করিয়ে তার কাছে কিছু চেয়েছে তাহলে সে জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করবে। তাওহীদের কথা শুনে যাদের মনে বিতৃষ্ঞা আসে যাদের অন্তরে রাসুলের প্রতি মহব্বত নেই, এতে তাদের ঈমানের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। এ ধরণের লোকের সামনে আল্লাহর নাম উচ্চারিত হলে তাদের মনে বিতৃষ্ঞা আসে, অন্য কোন উপাস্যের নাম উচ্চারিত হলে তারা খুশি হয়। তাদের জন্য পরকালে কঠোর আজাবের সংবাদ রয়েছে।একজন মুসলমান নামাজ ছাড়া বেহেস্তে যাওয়ার আশা করতে পারেন না। আল্লাতায়ালা বলেন, কাফেররা ছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না। ( সুরা ইউসুফ ৮৭) আবু হুরায়রা (রাঃ )থেকে বর্ণিত রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ঈমানদাররা যদি আল্লাহর আযাব সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত থাকতো , তবে কেউ তারা বেহেস্তের লোভ করতো না। আর কাফেররা যদি আল্লাহর রহমত সম্পর্কে পুরোপুরি জানতো তাহলে কেউ তার বেহেশত থেকে নিরাশ হতো না। ( মুসলিম)।  
আমরা আশরাফুল মাখলুকাত । বিবেকবান মানুষ হিসাবে প্রতিটি কাজে ভাল মন্দ বিচার করা আবশ্যক। দুনিয়ার দুটি ব্যাপারে আমরা তুলনামূলকভাবে স্থায়ী বিষয়টির উপর গুরুত্ব দেই। কিন্তু আখিরাতের ব্যাপারে দুনিয়া স্বল্পস্থায়ী হলেও আমরা দুনিয়ার সুখের ব্যাপারেই বেশি সময় দেই। এটি জান্নাতে যাওয়ার জন্য বাধা। প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য নফসকে নিয়ন্ত্রন করা প্রয়োজন । প্রবৃত্তি বা খেয়াল খুশীমত চল্লে এ চলা আমাদেরকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করবে। ইবনে জাওজি (রহঃ) বলেন, Ñ“ মনে রেখো , নফসের প্রকৃতি হচ্ছে দূর ভবিষ্যৎ বা ভাল –মন্দ বিচার না করে বর্তমান ভোগ ও আনন্দের প্রতি প্ররোচিত করা, তাকে প্রাধান্য দেয়া এবং তার জন্যই উদ্বুদ্ধ করা , যদিও এর পেছনে থাকে দুঃখ , লাঞ্ছনা  আর যন্ত্রণা। বিবেকবানরা নফসকে নিয়ন্ত্রণ করে পার্থিব ভোগ বিলাস ত্যাগ করে আল্লাহর রাস্তায় ধাবিত হন। লেখকঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের  প্রভাষক ও সাংবাদিক, কুমিল্লা। ০১৭১১৭১৩২৫৭
২-২-১৭  কালের কন্ঠ 
ওহির  আলোকে ঃ  জান্নাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক আমলসমুহ
যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে যবাই করে আল্লাহ তায়ালা তার উপর অভিশাপ বর্ষন করেন। (মুসলিম)।
অঅল্লাহ বলেন,একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা কর যদি তোমরা মুসলমান হয়ে থাক। ( ইউনুস ৮৪)।
আল্লাহ বলেন, আর যারা কুফুরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে নিশ্চিত ধ্বংস। আর তাদের কর্মফল বরবাদ করে দেয়া হবে। ঐ কারণে যে আল্লাহর নাযিল করা কুরআন বা এর অংশবিশেষকে তারা অপছন্দের দৃষ্টিতে দেখে। ফলে আল্লাহ তাদের সকল নেক আমল বরবাদ করে দিবেন (মুহাম্মদ ৯)।
এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, বল তোমরা কি আল্লাহ ও তার রাসুলক নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রæপ করেছিলে ? ( কাজেই আজ আমার সামনে ) তোমরা কোন ওজর আপত্তি পেশ করার চেষ্টা করো না। ঈমান আনার পরও ( সে বিদ্রæপের কারণে ) পুনরায় অবশ্যই তোমরা কুফরী করেছ (তাওবা ৬৫)।
আল্লাহ বলেন,  আর যে কেউ, ইসলাম ব্যাতীত অন্য কিছুকে দ্বীন হিসাবে ( অর্থাৎ জীবন বিধান হিসাবে ) গ্রহণ করতে চাইবে ( আল্লাহর সমীপে) কক্ষনো তা কবুল করা হবে না। বরং সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে  ( আল ইমরান ৮৫)।
রাসুল সাঃ বলেন, “ আমার সমস্ত উম্মতকে ক্ষমা করা হবে একমাত্র প্রকাশকারী ব্যাতীত। প্রকাশকারী হলো সেই ব্যক্তি যে রাত্রে পাপ করার পরে আল্লাহ তা গোপন রেখেছেন । কিন্তু সকালে বলে, হে উমুক ব্যক্তি আমি আজকে রাত্রে ঐ কাজ করেছি । সে রাত্রে যখন ঘুমায় আল্লাহ তার পাপকে ঢেকে রাখেন । অথচ সকালে সে তা লোকদের সম্মুখে প্রকাশ করে দেয়। ( বুখারি)।
আল্লাহ বলেন, সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে , যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত ও তার ডাকে সাড়া দেবে না ? আর তারা তাদের ডাক সম্বন্ধে অবহিত ও নয় ( আহকাফ ৫)।
আল্লাহ বলেন, তাদের পরে আসল এমন  এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরন করল। সুতরাং শীগ্রই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে( মারইয়াম ৫৯)
। আল্লাতায়ালা বলেন, কাফেররা ছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না। ( সুরা ইউসুফ ৮৭) অ
আবু হুরায়রা (রাঃ )থেকে বর্ণিত রাসুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ঈমানদাররা যদি আল্লাহর আযাব সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত থাকতো , তবে কেউ তারা বেহেস্তের লোভ করতো না। আর কাফেররা যদি আল্লাহর রহমত সম্পর্কে পুরোপুরি জানতো তাহলে কেউ তার বেহেশত থেকে নিরাশ হতো না। ( মুসলিম)।
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,
  

No comments

Theme images by mammuth. Powered by Blogger.