ইসলামে হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের রূপরেখা
হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের রূপরেখা ও ইসলাম
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,
মানুষের জীবন ধারণ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে জীবনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে এরূপ ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে নিজেদের রক্ষা করা মুমিনদের কর্তব্য। এজন্য জুম‘আর ছালাতের সময় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন,হে ঈমানদারগণ! জুম‘আর দিনে যখন ছালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। আর ছালাত সমাপ্ত হ’লে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (জুম‘আ ৬২/৯-১০)। উপরোক্ত আয়াতগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে। কোন কোন ব্যবসা মৌলিকভাবে হারাম। কুকুর বিক্রি করা সাধারণভাবে হারাম। আবু মাসউদ আনসারী রাঃ হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসুল সাঃ নিষেধ করেছেন কুকুরের মূল্য, ব্যাভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে (বোখারি)। পানি বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাবির বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, – তিনি বলেন, রাসুল সাঃ উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন ( মুসলিম)। অন্য এক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাঃ পশুকে পাল দেয়া বাবদ বিনিময় নিতে নিষেধ করেছেন।
ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সূদকে হারাম করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ’ (নিসা ৪/২৯)। উল্লিখিত আয়াতে (তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না) ‘অন্যায়ভাবে’ বলতে এখানে এমন সব পদ্ধতির কথা বুঝানো হয়েছে, যা সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী এবং নৈতিক ও শরী‘আতের দৃষ্টিতে অবৈধ। (পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য) বাক্যটি সংযুক্ত করে বলে দেয়া হয়েছে যে, যেসব ক্ষেত্রে ব্যবসার নামে সূদ, জুয়া, ধোঁকা-প্রতারণা ইত্যাদির আশ্রয় নিয়ে অন্যের সম্পদ হ¯তগত করা হয়, সেসব পন্থায় সম্পদ অর্জন বৈধ ব্যবসার অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং তা হারাম ও বাতিল পন্থা। তেমনি যদি স্বাভাবিক ব্যবসার ক্ষেত্রেও লেনদেনের মধ্যে উভয় পক্ষের আন্তরিক সন্তুষ্টি না থাকে, তবে সেরূপ ক্রয়-বিক্রয়ও বাতিল এবং হারাম। প্রতারণামূলক সকল ধরণের ব্যবসা হারাম। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাঃ নিষিদ্ধ করেছেন কেনা-বেচায় পাথর নিক্ষেপ প্রথা আর প্রতারণামূলক যাবতীয় ব্যবসায় (তিরমিজি)।
খাদ্যদ্রব্য বিক্রির সময় ক্রেতার সামনে পরিমাপ করে দেয়া উচিত। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত – রাসুল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি খাদ্য ক্রয় করবে সে যেন মাপ না করা পর্যন্ত তা বিক্রয় না করে।
জীবিকা লাভের অনেকগুলো উপায় রয়েছে। এর মধ্যে সততার সাথে ব্যবসা করা এটি উত্তম উপায়। রফিাহ বিন রাফি রাঃ থেকে বর্ণিত যে, নবী সাঃ জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন , কোন প্রকারের জীবিকা উত্তম ? উত্তরে তিনি বলেন, নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসায় ( বাযযার)। বিক্রি করারর পর কোন মালে ত্রæটি লক্ষ করা দেখা গেলে
বিক্রেতো তা ফেরত নেবেন। তাই “ বিক্রিত পন্য ফেরত নেয়া হয় না ” এ ধরণের কোন শর্ত দেয়া উচিত নয়। কোন পণ্যে কত লাভ করা যাবে এরূপ কোন নির্দেশনা কুরআন-হাদীছে পাওয়া যায় না। তবে এক্ষেত্রে ক্রেতা বা ভোক্তা যেন যুলুমের শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা যরূরী। শর্ত সাপেক্ষে পণ্য বিক্রি করা ঠিক নয়। আমর ইবনে শুয়াইব রাঃ বলেন, রাসুল সাঃ ঘোষণা করেছেন সালাফ ও বিক্রয় এক সঙ্গে যায়েজ নেই। একই সওদায় দুটি শর্ত জায়েজ নয়। যাতে কোন জিম্মাদারী নেই তাতে কোন (বৈধ) লাভ নেই। যে যায়গা থেকে মাল ক্রয় করা হল ঠিক সেখানে বসেই তা বিক্রি করা বৈধ নয়। একবার এক সাহাবী তা করতে গেলে যায়েদ ইবনে সাবিত রাঃ তাকে বাধা দিয়ে বলেন, রাসুল সাঃ ক্রয় করার যায়গাতে সাওদা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। যতক্ষন পর্যন্ত তা ক্রেতা তার বাসায় নিয়ে না যায়। যা তোমার দখলে নেই তা বিক্রয় বৈধ নয়। প্রতারনা করে বা কৗশল করেকিংবা মজুদদারী করে দাম বাড়ানো উচিত নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ বলেন, নাজশ বা ধোকা দিয়ে দাম বাড়ানোর কর্মকে রাসুল সাঃ নিষেধ করেছেন। সুরা হদ এ (৮৪) আল্লাহ বলেন, ...আল্লাহর উপাসনা কর, তোমাদের জন্য তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আর মাপে ও ওজনে কম করো না। ” ব্যবসা-বাণিজ্য ও পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে মানুষের সাথে দয়ার্দ্র, নম্র ও সদ্ব্যবহার পূর্বক ন্যায্য মূল্য গ্রহণ করা অত্যন্ত নেক কাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ ঐ মহানুভব মানুষের প্রতি দয়া করেন, যে ক্রয়-বিক্রয়ে এবং নিজের পাওনা আদায়ে নম্রতা ও সহনশীলতা প্রদর্শন করে’। আল্লাহ তা‘আলা মদ, মৃত প্রাণী, রক্ত, প্রতিমা এবং শূকরের গোশত প্রভৃতি হারাম করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রতি মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত হারাম করা হয়েছে’ (মায়েদাহ ৫/৩)।
অন্যত্র তিনি বলেন, হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ কিছুই নয়। অতএব এগুলো থেকে বিরত থাক, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (মায়েদাহ ৫/৯০)। আল্লাহ তা‘আলা যেসব দ্রব্য হারাম করেছেন, সেসব দ্রব্যের ব্যবসাও হারাম করেছেন। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মক্কা বিজয়ের বছর এবং মক্কা থাকাবস্থায় বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন,‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মদ, মৃত দেহ, শূকর ও প্রতিমা বেচা-কেনাকে হারাম করেছেন। লেখকঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক ও সাংবাদিক, কুমিল্লা। ০১৭১১৭১৩২৫৭
আলোকিত বাংলাদেশ ১২.২.১৭
ওহির আলোকে- ব্যবসা-বাণিজ্য
আল্লাহ বলেন,হে ঈমানদারগণ! জুম‘আর দিনে যখন ছালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। আর ছালাত সমাপ্ত হ’লে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (জুম‘আ ৬২/৯-১০)।
আবু মাসউদ আনসারী রাঃ হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসুল সাঃ নিষেধ করেছেন কুকুরের মূল্য, ব্যাভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে (বোখারি)। পানি বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাবির বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, – তিনি বলেন, রাসুল সাঃ উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন ( মুসলিম)। অন্য এক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাঃ পশুকে পাল দেয়া বাবদ বিনিময় নিতে নিষেধ করেছেন।
ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সূদকে হারাম করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ’ (নিসা ৪/২৯)। উল্লিখিত আয়াতে (তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না)
আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাঃ নিষিদ্ধ করেছেন কেনা-বেচায় পাথর নিক্ষেপ প্রথা আর প্রতারণামূলক যাবতীয় ব্যবসায় (তিরমিজি)।
খাদ্যদ্রব্য বিক্রির সময় ক্রেতার সামনে পরিমাপ করে দেয়া উচিত। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত – রাসুল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি খাদ্য ক্রয় করবে সে যেন মাপ না করা পর্যন্ত তা বিক্রয় না করে।
রফিাহ বিন রাফি রাঃ থেকে বর্ণিত যে, নবী সাঃ জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন , কোন প্রকারের জীবিকা উত্তম ? উত্তরে তিনি বলেন, নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসায় ( বাযযার)। বিক্রি করারর পর কোন মালে ত্রæটি লক্ষ করা দেখা গেলে
সুরা হদ এ (৮৪) আল্লাহ বলেন, ...আল্লাহর উপাসনা কর, তোমাদের জন্য তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আর মাপে ও ওজনে কম করো না। ”
তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রতি মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত হারাম করা হয়েছে’ (মায়েদাহ ৫/৩)।
অন্যত্র তিনি বলেন, হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ কিছুই নয়। অতএব এগুলো থেকে বিরত থাক, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (মায়েদাহ ৫/৯০)। আল্লাহ তা‘আলা যেসব দ্রব্য হারাম করেছেন, সেসব দ্রব্যের ব্যবসাও হারাম করেছেন। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মক্কা বিজয়ের বছর এবং মক্কা থাকাবস্থায় বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন,‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মদ, মৃত দেহ, শূকর ও প্রতিমা বেচা-কেনাকে হারাম করেছেন। মমিনুল ইসলাম মোল্লা,
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,
মানুষের জীবন ধারণ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে জীবনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে এরূপ ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে নিজেদের রক্ষা করা মুমিনদের কর্তব্য। এজন্য জুম‘আর ছালাতের সময় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন,হে ঈমানদারগণ! জুম‘আর দিনে যখন ছালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। আর ছালাত সমাপ্ত হ’লে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (জুম‘আ ৬২/৯-১০)। উপরোক্ত আয়াতগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে। কোন কোন ব্যবসা মৌলিকভাবে হারাম। কুকুর বিক্রি করা সাধারণভাবে হারাম। আবু মাসউদ আনসারী রাঃ হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসুল সাঃ নিষেধ করেছেন কুকুরের মূল্য, ব্যাভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে (বোখারি)। পানি বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাবির বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, – তিনি বলেন, রাসুল সাঃ উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন ( মুসলিম)। অন্য এক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাঃ পশুকে পাল দেয়া বাবদ বিনিময় নিতে নিষেধ করেছেন।
ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সূদকে হারাম করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ’ (নিসা ৪/২৯)। উল্লিখিত আয়াতে (তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না) ‘অন্যায়ভাবে’ বলতে এখানে এমন সব পদ্ধতির কথা বুঝানো হয়েছে, যা সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী এবং নৈতিক ও শরী‘আতের দৃষ্টিতে অবৈধ। (পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য) বাক্যটি সংযুক্ত করে বলে দেয়া হয়েছে যে, যেসব ক্ষেত্রে ব্যবসার নামে সূদ, জুয়া, ধোঁকা-প্রতারণা ইত্যাদির আশ্রয় নিয়ে অন্যের সম্পদ হ¯তগত করা হয়, সেসব পন্থায় সম্পদ অর্জন বৈধ ব্যবসার অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং তা হারাম ও বাতিল পন্থা। তেমনি যদি স্বাভাবিক ব্যবসার ক্ষেত্রেও লেনদেনের মধ্যে উভয় পক্ষের আন্তরিক সন্তুষ্টি না থাকে, তবে সেরূপ ক্রয়-বিক্রয়ও বাতিল এবং হারাম। প্রতারণামূলক সকল ধরণের ব্যবসা হারাম। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাঃ নিষিদ্ধ করেছেন কেনা-বেচায় পাথর নিক্ষেপ প্রথা আর প্রতারণামূলক যাবতীয় ব্যবসায় (তিরমিজি)।
খাদ্যদ্রব্য বিক্রির সময় ক্রেতার সামনে পরিমাপ করে দেয়া উচিত। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত – রাসুল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি খাদ্য ক্রয় করবে সে যেন মাপ না করা পর্যন্ত তা বিক্রয় না করে।
জীবিকা লাভের অনেকগুলো উপায় রয়েছে। এর মধ্যে সততার সাথে ব্যবসা করা এটি উত্তম উপায়। রফিাহ বিন রাফি রাঃ থেকে বর্ণিত যে, নবী সাঃ জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন , কোন প্রকারের জীবিকা উত্তম ? উত্তরে তিনি বলেন, নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসায় ( বাযযার)। বিক্রি করারর পর কোন মালে ত্রæটি লক্ষ করা দেখা গেলে
বিক্রেতো তা ফেরত নেবেন। তাই “ বিক্রিত পন্য ফেরত নেয়া হয় না ” এ ধরণের কোন শর্ত দেয়া উচিত নয়। কোন পণ্যে কত লাভ করা যাবে এরূপ কোন নির্দেশনা কুরআন-হাদীছে পাওয়া যায় না। তবে এক্ষেত্রে ক্রেতা বা ভোক্তা যেন যুলুমের শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা যরূরী। শর্ত সাপেক্ষে পণ্য বিক্রি করা ঠিক নয়। আমর ইবনে শুয়াইব রাঃ বলেন, রাসুল সাঃ ঘোষণা করেছেন সালাফ ও বিক্রয় এক সঙ্গে যায়েজ নেই। একই সওদায় দুটি শর্ত জায়েজ নয়। যাতে কোন জিম্মাদারী নেই তাতে কোন (বৈধ) লাভ নেই। যে যায়গা থেকে মাল ক্রয় করা হল ঠিক সেখানে বসেই তা বিক্রি করা বৈধ নয়। একবার এক সাহাবী তা করতে গেলে যায়েদ ইবনে সাবিত রাঃ তাকে বাধা দিয়ে বলেন, রাসুল সাঃ ক্রয় করার যায়গাতে সাওদা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। যতক্ষন পর্যন্ত তা ক্রেতা তার বাসায় নিয়ে না যায়। যা তোমার দখলে নেই তা বিক্রয় বৈধ নয়। প্রতারনা করে বা কৗশল করেকিংবা মজুদদারী করে দাম বাড়ানো উচিত নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ বলেন, নাজশ বা ধোকা দিয়ে দাম বাড়ানোর কর্মকে রাসুল সাঃ নিষেধ করেছেন। সুরা হদ এ (৮৪) আল্লাহ বলেন, ...আল্লাহর উপাসনা কর, তোমাদের জন্য তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আর মাপে ও ওজনে কম করো না। ” ব্যবসা-বাণিজ্য ও পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে মানুষের সাথে দয়ার্দ্র, নম্র ও সদ্ব্যবহার পূর্বক ন্যায্য মূল্য গ্রহণ করা অত্যন্ত নেক কাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ ঐ মহানুভব মানুষের প্রতি দয়া করেন, যে ক্রয়-বিক্রয়ে এবং নিজের পাওনা আদায়ে নম্রতা ও সহনশীলতা প্রদর্শন করে’। আল্লাহ তা‘আলা মদ, মৃত প্রাণী, রক্ত, প্রতিমা এবং শূকরের গোশত প্রভৃতি হারাম করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রতি মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত হারাম করা হয়েছে’ (মায়েদাহ ৫/৩)।
অন্যত্র তিনি বলেন, হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ কিছুই নয়। অতএব এগুলো থেকে বিরত থাক, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (মায়েদাহ ৫/৯০)। আল্লাহ তা‘আলা যেসব দ্রব্য হারাম করেছেন, সেসব দ্রব্যের ব্যবসাও হারাম করেছেন। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মক্কা বিজয়ের বছর এবং মক্কা থাকাবস্থায় বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন,‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মদ, মৃত দেহ, শূকর ও প্রতিমা বেচা-কেনাকে হারাম করেছেন। লেখকঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক ও সাংবাদিক, কুমিল্লা। ০১৭১১৭১৩২৫৭
আলোকিত বাংলাদেশ ১২.২.১৭
ওহির আলোকে- ব্যবসা-বাণিজ্য
আল্লাহ বলেন,হে ঈমানদারগণ! জুম‘আর দিনে যখন ছালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। আর ছালাত সমাপ্ত হ’লে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (জুম‘আ ৬২/৯-১০)।
আবু মাসউদ আনসারী রাঃ হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসুল সাঃ নিষেধ করেছেন কুকুরের মূল্য, ব্যাভিচারের বিনিময় এবং গণকের পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে (বোখারি)। পানি বিক্রির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাবির বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, – তিনি বলেন, রাসুল সাঃ উদ্বৃত্ত পানি বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন ( মুসলিম)। অন্য এক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাঃ পশুকে পাল দেয়া বাবদ বিনিময় নিতে নিষেধ করেছেন।
ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সূদকে হারাম করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ’ (নিসা ৪/২৯)। উল্লিখিত আয়াতে (তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না)
আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাঃ নিষিদ্ধ করেছেন কেনা-বেচায় পাথর নিক্ষেপ প্রথা আর প্রতারণামূলক যাবতীয় ব্যবসায় (তিরমিজি)।
খাদ্যদ্রব্য বিক্রির সময় ক্রেতার সামনে পরিমাপ করে দেয়া উচিত। আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত – রাসুল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি খাদ্য ক্রয় করবে সে যেন মাপ না করা পর্যন্ত তা বিক্রয় না করে।
রফিাহ বিন রাফি রাঃ থেকে বর্ণিত যে, নবী সাঃ জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন , কোন প্রকারের জীবিকা উত্তম ? উত্তরে তিনি বলেন, নিজ হাতের কামাই এবং সৎ ব্যবসায় ( বাযযার)। বিক্রি করারর পর কোন মালে ত্রæটি লক্ষ করা দেখা গেলে
সুরা হদ এ (৮৪) আল্লাহ বলেন, ...আল্লাহর উপাসনা কর, তোমাদের জন্য তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। আর মাপে ও ওজনে কম করো না। ”
তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রতি মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত হারাম করা হয়েছে’ (মায়েদাহ ৫/৩)।
অন্যত্র তিনি বলেন, হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ কিছুই নয়। অতএব এগুলো থেকে বিরত থাক, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (মায়েদাহ ৫/৯০)। আল্লাহ তা‘আলা যেসব দ্রব্য হারাম করেছেন, সেসব দ্রব্যের ব্যবসাও হারাম করেছেন। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মক্কা বিজয়ের বছর এবং মক্কা থাকাবস্থায় বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন,‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মদ, মৃত দেহ, শূকর ও প্রতিমা বেচা-কেনাকে হারাম করেছেন। মমিনুল ইসলাম মোল্লা,
No comments